স্বাস্থ্যখাতে প্রধানমন্ত্রীর যত সফলতা
স্বাস্থ্যখাতে প্রধানমন্ত্রীর সফলতা
১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থমকে যায় বাংলাদেশের উন্নয়নের সকল অগ্রযাত্রা। তখন এক মহাঅনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে বাংলাদেশ। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
এবার হাল ধরেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা, ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
প্রথমেই বৃহত্তর গরিব জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করেন। শুরু হয় স্বাস্থ্যখাতের আমুল পরিবর্তন। ইন্সটিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ ও হাসপাতাল (আইপিজিএমআর)-কে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে’ রূপান্তরিত করেন তিনি। নাম দেয়া হয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’। ফলে দেশে যাত্রা শুরু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের।
বঙ্গবন্ধু কন্যা একে একে স্বাস্থ্যখাতে মালা গাঁথতে শুরু করেন। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি ‘ইপিআই’ নিয়ে যায় বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায়।
দেশের শূন্য থেকে ১৮ মাস বয়সী সব শিশুকে এই টিকার আওতায় আনা হয়। এরপর টিকা দেয়া হয় ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী সন্তানধারণে সক্ষম নারীদেরও। যার মূল লক্ষ্য শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহার হ্রাস করা, সংক্রামক রোগ নির্মূল ও পঙ্গুত্ব রোধ করা।
‘ইপিআই’ কর্মসূচির ফলে যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, মা ও নবজাতকের ধনুষ্টঙ্কার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি, নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়া, পোলিও মাইলাইটিস, হাম ও রুবেলা নির্মূলে অভাবনীয় সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ।
১৯৮৫ সালে টিকাদানের হার মাত্র দুই শতাংশ হলেও বর্তমানে তা ৯৮ শতাংশেরও বেশি।
সারা দেশে ১৩ হাজার ৭৭৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছেছে মানুষ দোরগোড়ায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২০১৮ সালের জরিপ বলছে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৭৫ কোটি মানুষ ক্লিনিকগুলো থেকে সেবা নিয়েছে। এসব সেবায় সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে তাদের ৮০ শতাংশ রোগী। টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সফলতার জন্য ২০১৯ এর ২৩ সেপ্টেম্বর ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার পায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বিশ্ববাসীকে। অপরদিকে টিকা কার্যক্রমেও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও প্রসংশিত তিনি।
এছাড়া স্বাস্থ্যখাতে তথ্য প্রযুক্তির নীরব বিপ্লব, নিজ দেশের চাহিদা মিটিয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৪৫টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য অবকাঠামোর উন্নয়ন, চিকিৎসক, নার্স ও টেকনোলজিস্ট নিয়োগ, ১০০টি হাসপাতালে টেলিমেডিসিন সেবা চালু, হৃদরোগ, কিডনি, লিভার, ক্যান্সার, নিউরো, চক্ষু, বার্ন, নাক-কান-গলা, নার্সিং ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল স্থাপন করেছেন তিনি।
স্বাস্থ্য খাতের অভাবনীয় এসব সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী অর্জন করেছেন ৩টি জাতিসংঘ পুরস্কারসহ ১৬টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা।