পরোক্ষ ধূমপানে বাড়ছে ফুসফুসের সংক্রমণ

হাসান মাহমুদ
2021-09-25 19:58:04
পরোক্ষ ধূমপানে বাড়ছে ফুসফুসের সংক্রমণ

সঠিক সময় চিকিৎসা না নিলে হার্ট ফেইলিওর এবং রেসপিরেটরি ফেইলিওরও হতে পারে

ফুসফুসের সংক্রমণের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পরোক্ষ তথা অন্যের ধূমপান। পাশাপাশি কলকারখানা ও যানবাহনের কালো ধোঁয়ায় থাকা সিসা এবং ধুলিকণার কারণেও ফুসফুসের সংক্রমণ বাড়ছে।

‘বিশ্ব লাং দিবসে’ ক্রমবর্ধমাণ এই স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

অ্যালার্জিজনিত রোগ ব্রংকাইটিস, অ্যাজমা, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) ছাড়াও শিশুদের নিউমোনিয়ার কারণে সাধারণত ফুসফুস বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে ফুসফুস সংক্রমণের হার বেড়েছে।

বিশেষ করে শহুরে পরিবেশে বেড়ে ওঠা মানুষই বেশি ফুসফুসের রোগে আক্রন্ত হচ্ছেন বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমবিডিসি পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম।

তিনি বলেন, দেশে সংক্রমণের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও যেসব কারণে মানুষকে হাসপাতলে ভর্তি করতে হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয় ফুসফুসের সংক্রমণের কারণে। শহুরে পরিবেশে ক্রমবর্ধমাণ দূষণ এবং পরিবেশে গাছের পরিমাণ কমে যাওয়া এর অন্যতম কারণ।

পরিবেশ রক্ষায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত প্রয়াস প্রয়োজন বলেও মনে করেন অধ্যাপক শামিউল ইসলাম।

ফুসফুস সংক্রমণের লক্ষণ সম্পর্কে  বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. দেবাশীষ কুমার গুপ্ত বলেন, ইনফ্লয়েঞ্জার কারণে প্রথম দিকে শরীর ম্যাজ ম্যাজ করবে, সর্দি কাশি থাকবে এবং সাধারণত নাক দিয়ে সব সময় পানি পড়বে। হাঁচি বা গলা ব্যথা করতে পারে, এর সঙ্গে শুকনো কাশি থাকবে।

তিনি বলেন, নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে তাপমাত্রা ১০৩-১০৫ পর্যন্ত হয়ে থাকে, সঙ্গে বুকে ব্যথা হতে পারে। প্রথমে শুকনো কাশি এবং পরে লাংগসে কফ জন্মে এর সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। শিশু ও বয়ষ্কদের সাধারণত এই সংক্রমণ বেশি হয়ে থাকে।

ডা. দেবাশীষ আরও বলেন, অ্যাজমার ক্ষেত্রে সাধারণত রোগীর পারিবারিক হিস্ট্রি থাকে। এছাড়া যে কোনো অ্যালার্জির কারণেও হতে পার।

অ্যালার্জির উৎস সম্পর্কে তিনি বলেন, ফুলের রেণু, ধুলা বা ধোঁয়া, কিছু খাবার যেমন- গরুর মাংস, চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ বা বেগুনে অ্যালার্জি সাধারণত থাকে। এছাড়া ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার খেলে সাধারণত এক ধরনের কাশি তৈরি হয় এবং বুকে শাঁই শাঁই আওয়াজ করে। হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং বুকে এক ধরনের চাপ অনুভব করে।

এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, নিউমোনিয়ার সংক্রমণ সেরে উঠতে না পারলে, সেটি রক্তে চলে যায়। এমন কি এটি ব্রেইনেও আক্রান্ত করতে পারে। এছাড়া ফুসফুসের পর্দায় গিয়ে পানি জমে যেতে পারে। পরবর্তীতে ফুসফুসে প্রদাহ হতে পারে। এসময় কাশির সঙ্গে রক্ত আসতে পারে।

এছাড়া সিওপিডি রোগী সঠিক সময় চিকিৎসা না নিলে হার্ট ফেইলিওর এবং রেসপিরেটরি ফেইলিওরও হতে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।


আরও দেখুন: