তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে ৬ সংশোধনী আনার দাবি

ফখরুল ইসলাম
2021-09-22 19:46:33
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে ৬ সংশোধনী আনার দাবি

সেমিনারে উপস্থিত অতিথিরা

দেশে তামাকের নিরব মহামারী চলছে উল্লেখ করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে ছয়টি গুরুত্বর্পূণ সংশোধনী আনার দাবি তুলেছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ।

বুধবার রাজধানীর ফারস হোটেলে বাংলাদেশ হেলথ রিপোটার্স ফোরামের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি করা হয়।

‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভায় বলা হয়, দেশের পৌনে ৪ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক সেবন করছেন। তাদের ৪৬ ভাগ পুরুষ আর ২৫ ভাগ নারী। আর প্রাপ্তবয়স্কদরে মধ্যে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ।

এতে বক্তারা বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহারে বাড়ছে হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধিসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগ। অকালেই প্রাণ হারাচ্ছেন তামাক সেবনকারীরা।

তারা বলেন, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে কঠোরভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। এজন্য তামাক নয়িন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করতে এর ছয়টি ধারা সংশোধন করা অত্যন্ত জরুরি।

এগুলো হলো- করোনার এই সময়ে সব ধরনের পাবলকি প্লেস ও গণপরিবহনকে শতভাগ তামাকমুক্ত করা, দোকানে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট আমদানি, উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে মুদ্রিত সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধি করা এবং তামাকদ্রব্যের খুচরা বিক্রি নিষিদ্ধ করা।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর ডা. আহমদ খাইরুল আবরার মূল প্রবন্ধে বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় পৌনে ৪ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করছেন। কর্মক্ষেত্রেসহ পাবলকি প্লেসে ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ।’

তিনি বলেন, ‘দেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। তাছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে ধূমপায়ীদের মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা ১৪ গুণ বেশি।’

দেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন ১৫ লাখের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে মারা যাচ্ছেন ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে ধূমপায়ীদের মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা ১৪ গুণ বেশি।

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দেশে বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনটির বিভিন্ন দিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যর্পূণ। তারপরও কিছু জায়গায় দুর্বলতা রয়েছে। এই দুর্বলতাগুলো সংশোধন করা হলে আইনটি আরো কার্যকর হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ হেল্থ রিপোটার্স ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছে হেলথ রিপোটার্স ফোরাম। এই ফোরামের সদস্যরা তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন করে থাকেন। তারা সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের সচেতন করবেন।’

সভায় ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজর আতাউর রহমান মাসুদ, ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ রাব্বি ছাড়াও ফোরামের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


আরও দেখুন: