করোনা মোকাবেলা করে এসডিজি অর্জনে বৈশ্বিক রোডম্যাপ আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বাসস
2021-09-21 12:49:02
করোনা মোকাবেলা করে এসডিজি অর্জনে বৈশ্বিক রোডম্যাপ আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বক্তব্যে পাঁচ দফা প্রস্তাবনা দেন তিনি, যাতে এসডিজিএস অর্জন নিশ্চিত করতে যথাযথভাবে বৈশ্বিক করোনা মহামারী মোকাবেলা করা প্রয়োজন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা পরিস্থিতি থেকে স্থায়ীভাবে উত্তরণ নিশ্চিত করে ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য একটি বৈশ্বিক রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) টেকসই উন্নয়নের ওপর নবম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি বক্তব্য প্রদানকালে একথা বলেন তিনি। আর্থ ইনস্টিটিউট, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, গ্লোবাল মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট প্র্যাকটিস এবং ইউএন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্ক এ সম্মেলনের আয়োজক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদেরকে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে ফিরে যাওয়ার জন্য একটি সাহসী ও উচ্চাভিলাষী বৈশ্বিক রোডম্যাপ প্রণয়ন করা প্রয়োজন, যাতে কেউ পেছনে পড়ে না থাকে।’

বক্তব্যে পাঁচ দফা প্রস্তাবনা দেন তিনি, যাতে এসডিজিএস অর্জন নিশ্চিত করতে যথাযথভাবে বৈশ্বিক করোনা মহামারী মোকাবেলা করা প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই বৈশ্বিক মহামারী থেকে টেকসই উত্তরণের ওপরেই এখন এসডিজির সাফল্য নির্ভর করছে। এখন বিশ্বের সব স্থানে টিকা নিশ্চিত করা সময়ের দাবি এবং তা অতি জরুরি।’

তিনি দ্বিতীয় প্রস্তাবনায় বলেন, ‘২০৩০ এজেন্ডা বাস্তবায়নে আমাদের সম্পদের যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে, তা অবশ্যই কমাতে হবে।’ তৃতীয় প্রস্তাবনায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘চলমান বৈশ্বিক মহামারীর অভিঘাতের কারণে ১৯৯৮ সালের পর এই প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাচ্ছে তার জন্য আমরা উদ্বিগ্ন। অধিকন্তু, আমাদের পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক সুরক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনীর ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী তার চতুর্থ প্রস্তাবনায় বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি করোনা পরিস্থিতি থেকে পুনরুদ্ধার পদক্ষেপগুলো ভবিষ্যতে যে কোনো ধরনের বিপর্যয় বা দুর্যোগ মোকাবেলায় জোরালো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণকে পূর্ণতা দেবে।’

সর্বশেষ প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, ‘এসডিজি বাস্তবায়নে অবশ্যই পর্যবেক্ষণ জোরদার করা ও যান্ত্রিক সহায়তার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের সমন্বয় বাড়ানো উচিৎ।’

প্রধানমন্ত্রী মহামারী ও অন্যান্য জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রতিটি স্তরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রস্তুতি বৃদ্ধির পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, ‘করোনা বিশ্বকে হতাশ করেছে। এই বৈশ্বিক প্রাণঘাতী মহামারী বহু মানুষের জীবন কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি এর কারণে অসংখ্য মানুষ তাদের জীবিকা হারিয়েছে। মহামারীর কারণে বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়েছে ও ক্ষুধার্ত রয়েছে। শিক্ষার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, বিশেষত শিশুদের শিক্ষা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাইজেশন ও সংযোগে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ডিজিটাল অর্থনীতি, তরুণদের নেতৃত্বে উদ্ভাবন এবং রূপান্তরমূলক আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনকে উৎসাহিত করেছে। এটি এখন আমাদের করোনা মহামারীকে আরও ভালোভাবে মোকাবেলা করতে সহায়তা করছে।’

সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গত এক দশকে আমাদের দারিদ্রতার হার ৩১ দশমিক ৫ থেকে কমে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে এবং আমাদের মাথাপিছু আয় তিনগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশু মৃত্যুর হার প্রতি ১ হাজারে ২৩ দশমিক ৬৭ ও মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি ১ লাখে ১৭৩ জন হ্রাস পেয়েছে এবং জীবনের দীর্ঘায়ু বেড়ে ৭৩ বছর হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মহিলা এবং শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা প্রদানের জন্য ১৮ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করেছি।’


আরও দেখুন: