ট্রেনে চিকিৎসক দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে
ট্রেনে চিকিৎসক দেওয়ার প্রস্তাব দেবে
ট্রেনে যাতায়াতে অনেক সময় যাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। কখনোবা বাইরে থেকে ছোরা পাথরের আঘাতে অনেকে আহত হন। এ সময় ট্রেনেই তাঁদের চিকিৎসা দিতে অন্তত একজন চিকিৎসক দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দেবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে রেলওয়ে পশ্চিম রাজশাহীর মহাব্যবস্থাপকের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব বলেন পশ্চিমাঞ্চল রেল মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ।
পশ্চিমাঞ্চল রেল মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ বলেন, আমরা এর আগেও ট্রেনে ডাক্তার রাখার প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সেভাবে কোন আগ্রহ দেখাননি। এখন আমরা আবারও প্রস্তাব দেব যাতে এর সমাধান করা হয়।
মহাব্যবস্থাপক আরও বলেন, ট্রেনের পাশাপাশি স্টেশনগুলোতে ফার্মেসি এবং ডাক্তার রাখা যায় কী না সে বিষয়েও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। একটা নীতিমালা প্রস্তুত করে পাঠাব। এবার হয়তো কর্তৃপক্ষ বিষয়টা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে বলে আশা করছি।
উল্লেখ্য, গত ১৬ সেপ্টেম্বর খুলনা থেকে রাজশাহীগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনে সাবিনা ইয়াসমিন (২৫) নামের এক প্রসূতি সন্তান প্রসব করেন। ওই নারীর প্রসব বেদনা উঠলে ট্রেনের পরিচালক মাইকে অন্যদের কাছ থেকে সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় ট্রেনে থাকা একজন নারী চিকিৎসক ডা. ফারজানা তাসনীম ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী মুক্তা রানী কর্মকার ওই প্রসূতি নারীকে সাহায্য করেন এবং সন্তান প্রসব সম্পূর্ণ করান।
গতকাল রোববার ওই দুজনসহ সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে সংবর্ধনা দেয় পশ্চিমাঞ্চল রেল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ডা. ফারজানা তাসনীম ডক্টর টিভিকে বলেন, নাড়ি কাটার আগে তা বাঁধতে হয়। তার জন্য দরকার সুতা। ট্রেনে ব্লেডের ব্যবস্থা হলেও ভালো সুতা পাওয়া যায়নি। একটু নাইলনকেই সুতা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ট্রেনে প্রাথমিক চিকিৎসার সব ধরনের উপকরণ এবং একজন চিকিৎসক থাকা দরকার বলে মনে করছি।
এদিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শিক্ষানবিশ আইনজীবী মুক্তা রানী বলেন, ট্রেনে প্রসূতিকে শোয়ানোর মতোও কোন জায়গা পাওয়া যাচ্ছিল না। তার ওপর ঝাঁকুনি তো ছিলই। সে কারণে ডেলিভারির সময় বাচ্চাটা আঘাত পেয়েছে। ট্রেনে অন্তত রোগীর জন্য একটি জায়গা রাখলে ভালো হয়। আমার এ ধরনের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। তাই যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। এ জন্য ট্রেনে একজন করে চিকিৎসক থাকা দরকার।
এদিকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত বছরের ৮ জুলাই থেকে চলতি বছরের ২২ জুন পর্যন্ত পশ্চিমাঞ্চলে ৭৪টি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬৩টি ট্রেনের দরজা-জানালার কাচ ভেঙে গেছে। আহত হয়েছেন ২০ জন যাত্রী। ট্রেনে চিকিৎসক না থাকায় আহতদের সবাইকে পরবর্তী স্টেশনে নেমে চিকিৎসা সেবা দিতে হয়েছে। ট্রেনে চিকিৎসক থাকলে তাৎক্ষণিক তাদের চিকিৎসা দেওয়া যেত।