রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের প্রায় ১৪ শতাংশ করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও মারা যাচ্ছেন।

গত তিন দিনের (১০ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত) হিসেবে দেখা গেছে, এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর ১৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ রোগী করোনামুক্ত হওয়ার পরও শারীরিক নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন।

করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও প্রায় ১৪ শতাংশ রোগী মারা যাচ্ছেন। এছাড়া আইসিইউতে যাওয়া রোগীদের মধ্যে করোনামুক্ত রোগী রয়েছেন ১৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

চিকিৎসকেরা বলছেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে (ভারতীয় ধরন) ‘পোস্ট কোভিড তথা করোনা পরবর্তী’ জটিলতা যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে হাসপাতালে এ ধরনের রোগীর ফের ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা।

যারা করোনা পরবর্তী জটিলতায় ভুগছেন, তাদের বেশির ভাগই করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা শুরু করতে দেরি করার কারণে এই মৃত্যু ঘটছে বলে তারা জানান।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউর ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, করোনা নেগেটিভ হওয়ার পর শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আইসিইউতেও আগের চেয়ে এই রোগীর সংখ্যা বেশি হচ্ছে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়িতে গিয়েও অনেক রোগী আবার ফিরে আসছেন। তাদের অনেকেরই হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ ছাড়াও পাকস্থলী ও কিডনি অকার্যকরসহ বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিচ্ছে।

তিনি বলেন, এটা নতুন এক ধরনের রোগ। করোনা যা করার, প্রথম সাত দিনের মধ্যেই করে ফেলছে। করোনা দেহের অনেক কিছুই অচল করে দিয়ে চলে যাচ্ছে। তারপর যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে।

হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য মতে, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গেল ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি আছেন ৩৪২ জন। এদের মধ্যে করোনা নেগেটিভ হয়ে পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসাধীন ৬৫ জন।

এ দিন আইসিইউতে ভর্তি ২০ জনের মধ্যে তিনজন করোনামুক্ত হওয়া রোগী ছিলেন। আর করোনা ইউনিটে মারা যাওয়া নয়জনের মধ্যে একজন করোনা নেগেটিভ হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।

চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে (১ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত) করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১৭৯ জন। এদের মধ্যে করোনামুক্ত হয়ে পরবর্তী শারীরিক স্বাস্থ্য জটিলতায় মারা যান ২৪ জন। এ ধরনের মৃত্যুর হার ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ।

এর আগে গত জুলাই মাসে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা যান ৫৩১ জন। এদের মধ্যে ৩১ জন মারা যান করোনা পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায়। মৃত্যুর হার ছিল ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। জুন মাসে এই হার ছিল ১ দশমিক ৯০ শতাংশ।