দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে লিভার ক্যানসারে মৃত্যু
লিভার ক্যানসার নিয়ে রোগীদের অসচেতনতার পাশাপাশি রয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থার অপ্রতুলতাও।
দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে লিভার রোগীর সংখ্যা। বছরেই এই রোগে মৃত্যু বরণ করছেন গড়ে প্রায় ২১ হাজার মানুষ যাদের সিংহভাগই লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত। দেশে ক্যানসারজনিত মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ এটি।
রোগীদের অসচেতনা, চিকিৎসা ব্যবস্থার অপ্রতুলা ও রোগীদের অনেক দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসা এর মূল কারন বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইন্টারভেনশনাল ডিভিশনের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।
সাধারণত ৪০ বছর বয়সীরা লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে দেশে রোগটিতে কম বয়সীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। এ জন্য ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবারের ব্যপকতাকে দায়ী করছেন চিকিৎকেরা।
স্থুলতা, ফ্যাটি লিভার, হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ রোগে আক্রান্তরাও লিভার ক্যানসারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। লিভার ক্যানসার নিয়ে রোগীদের অসচেতনতার পাশাপাশি রয়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থার অপ্রতুলতাও। এছাড়া রোগীরা সঠিক সময়ে সেবা নিতে না আসায় বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা।
শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাসেট্রালিভার ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যপক ডা. ফারুক আহমেদ বলেন, ‘কোনোভাবেই যেন অতিরিক্ত ওজন না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পরিমিত ও সুষম খাদ্যগ্রহণ ও নিয়মিত ব্যায়ম করতে হবে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশ ৫ শতাংশ মানুষ হেপাটাইসি ‘বি’ ভাইরাসে আক্রান্ত আর ১ শতাংশ হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাসে আক্রান্ত। প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। এসব কারণে দেশে লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি।
লিভার ক্যানসারে মৃত্যু হার কমাতে প্রয়োজন ব্যয় কমিয়ে আনা। পাশাপাশি রোগীদের সুস্থ করতে লিভারের অত্যাধুনিক চিকিৎসা প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে চালু জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি লিভারের সর্বাধুনিক চিকিৎসায় চালু হয়েছে বিএসএমএমইউ’র ইনটারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশন। এটি ধারাবাহিক থাকলে সারাদেশে এই সেবা ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে বলে মত ডিভিশনের প্রধান ডা. মামুন আল মাহতাবের।