ষাটোর্ধ্ব ১২ জনে একজন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত

অনলাইন ডেস্ক
2021-07-01 12:33:19
ষাটোর্ধ্ব ১২ জনে একজন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত

প্রতি ১২ জনে এক জন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর’বি) গবেষণায় দেখা গেছে দেশে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রতি ১২ জনের মধ্যে একজন্য ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ সমস্যায় ভুগছে।

গতকাল বুধবার (৩০ জুন) রাতে আইসিডিডিআর,বি আয়োজিত 'বাংলাদেশের প্রবীণ ব্যক্তিদের মধ্যে ডিমেনশিয়ার ব্যাপকতা: জাতীয় সমীক্ষার ফলাফল' শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা থেকে এ তথ্য জানা যায়।

আইসিডিডিআর,বি ছাড়াও গবেষণায় অংশ নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতাল।

ওয়েবিনারের স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইন ডিরেক্টর প্রফেসর ডা. রোবেদ আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিডিডিআর,বির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. তাহমিদ আহমেদ, নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ডিমেনশিয়া এমন একটি সিনড্রোম এর ফলে স্মৃতিশক্তি, চিন্তাভাবনা, আচরণ এবং প্রতিদিনের কার্যকলাপ সম্পাদন করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষের ডিমেনশিয়া রয়েছে এবং এর ৬০ শতাংশ নিন্ম ও মধ্যম আয়ের দেশে বসবাস করেন।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের মধ্যে ডিমেনশিয়া সম্পর্কে খুব কম তথ্য রয়েছে যা প্রবীণ নাগরিকদের সেবা দিতে নীতি নির্ধারকদের একটি বাস্তবমুখী কৌশল তৈরির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। অন্যদিকে, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশিরভাগ প্রোগ্রাম প্রজননক্ষম বয়সের মানুষকে কেন্দ্র করে বাস্তবায়িত হয়ে থাকে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১২ জন ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তির মধ্যে একজনের ডিমেনশিয়া দেখা গেছে (প্রকোপ ৮ শতাংশ) এবং নারীদের মধ্যে সমবয়সী পুরুষদের তুলনায় ডিমেনশিয়ার প্রকোপ ২.৫ গুণ বেশি।

অন্যান্য বিভাগের তুলনায় রাজশাহী এবং রংপুরে (১৫ শতাংশ এবং ১২ শতাংশ) ডিমেনশিয়ার প্রকোপ বেশি এবং শহুরে ও গ্রামীণ অঞ্চলে (৮ শতাংশ)-এর মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়নি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিমেনশিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে যারা কখনও স্কুলে যায়নি এবং যাদের স্ত্রী বা স্বামী নেই সামগ্রিকভাবে ডিমেনশিয়ার প্রকোপ তাদের মধ্যে অন্যদের চেয়ে বেশি দেখা গেছে।

গবেষণায় সুপারিশ করা হয়েছে, বয়স্ক ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বাংলাদেশের পরিবার, সমাজ, বেসরকারি এবং সরকারি পর্যায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অত্যাবশ্যক। পাশাপাশি এদেশে একটি উদ্ভাবনী স্থানীয় প্রমাণভিত্তিক উদ্যোগের মাধ্যমে ডিমেনশিয়ার প্রকোপ কমানো যাবে।


আরও দেখুন: