রক্তের মাধ্যমে করোনা সংক্রমিত হয় না
নিকট আত্মীদের মাধ্যমে বিশেষ করে যাদের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, তাদের থেকে রক্ত না নেওয়াই ভালো।
বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় সাড়ে ৯ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন যার ৩০ শতাংশ আসে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে। বাকি ৭০ শতাংশই রক্তগ্রহীতার স্বজন ও অপরিচিতরা দিয়ে থাকেন।
দেশে নারীদের রক্ত দেওয়ার সুযোগ ও প্রবণতা কম। রক্তদাতাদের মাত্র ৬ শতাংশ নারী। বছরজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপে রক্ত সংগ্রহের হার অনেকটাই কমেছে। এতে যাদের প্রতিনিয়ত রক্ত পরিসঞ্চলন করতে হয়, তারা পড়েছেন বিপাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্তের মাধ্যমে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণায় এমন কিছু পাওয়া যায়নি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন আহমেদ খান ডক্টর টিভিকে বলেন, ‘করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই আমরা মানুষকে হাসপাতালে না আসতে বলেছিলাম। এর মধ্যে কিছু মানুষের ধারণা জন্ম নিয়েছে যে, রক্তের মাধ্যমে করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণায় এর প্রমাণ মেলেনি। এটি সমাজের একটি ভ্রান্ত ধারণা।’
নিকট আত্মীদের মাধ্যমে বিশেষ করে যাদের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, তাদের থেকে রক্ত না নেওয়ার পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, দেশে ৩৪০টি রক্তদান কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ২০৬টি এবং বেসরকারি কেন্দ্র ১৩৪টি। এর বাইরে অনিবন্ধিত অসংখ্য ব্লাড ব্যাংক ও প্লাজমা সেন্টার রয়েছে যাদের মূল লক্ষই সেবা দেওয়া।
রক্তদাতা সংগঠন রিদম ব্লাড ব্যাংকের অ্যাডমিন অফিসার মো. আবু হানিফ ডক্টর টিভিকে বলেন, আমরা যারা স্বেচ্চাসেবক সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ করি, আমাদের প্রশান্তির জায়গা কাউকে সেবা দেওয়া।
তিনি বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হয়ে অনেকেই রক্তের জন্য এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ান। তাদের অনেকেই আমাদের কাছে আসেন। এ সকল অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমেই আমরা আত্মতৃপ্তি খুজে পাই।
ধর্ম গবেষকরা বলছেন, মানবতার কল্যাণে মুমূর্ষুদের পাশে দাঁড়ানো ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকেও পূণ্যের কাজ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহা. রফিকুল ইসলাম ডক্টর টিভিকে বলেন, ইসলাম সবসময় মানবতা শিক্ষা দেয়। কোরআন-হাদিসে কিছু মানবিক বিধান রয়েছে। তার আলোকেই রক্তদানকে হালাল করা হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরা মায়েদায় বলেছেন, যে একজন মানুষকে বাঁচালো, সে যেনো পুরো মানবজাতিকে বাঁচালো।
নিয়মিত রক্ত দানে অন্যের জীবন রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি, রক্তদাতাকে শরীরের অনেক রোগবালাই থেকে বাঁচায়। তাই রক্তদানে সবার এগিয়ে আসা উচিত।