খুলনায় অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে করোনা সক্রমণ
খুলনায় করোনায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে, ফাইল ছবি
খুলনা বিভাগে বেড়েই চলছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। অদৃশ্য এই ভাইরাসে শনাক্ত এবং আক্রান্ত হয়ে মৃতের মিছিল ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৭ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়। আর গত ২৪ ঘন্টায় করোনা হাসপাতালে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ জনে। এর মধ্যে করোনায় ৬ জন এবং উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৩ জন।
করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রোগীর চাপও লাগাম ছাড়া। ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে এখানে। ১শ’ শয্যার হাসপাতাটিতে বুধবার (৯ জুন) পর্যন্ত ভর্তি ১৩০ জন।
করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, বুধবার সকাল পর্যন্ত খুলনা করোনা হাসপাতালে ৯ জনের মৃত্যু হয়। এরমধ্যে করোনা আক্রান্তে ৬ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়। আর ভর্তি আছেন ১৩০ জন রোগী। যার মধ্যে ৬২ জন রেড জোনে, ২৯ জন ইয়োলো জোনে। এছাড়া আইসিইউতে ১৮ জন এবং এইচডিইউতে ২১ জন আছেন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ভর্তি হয়েছেন ৫৭ জন রোগী। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫১ জন।
খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ জানান, মঙ্গলবার রাতে খুমেকের পিসিআর মেশিনে ২৭৯টি নমুনায় ৮১ জনের পজিটিভ আসে। যার মধ্যে খুলনার ১৯৩ নমুনায় ৩৯ জন শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া বাগেরহাটের ২৬ জন, যশোরের ২ জন, পিরোজপুরের ২ জন, গোপালগঞ্জের একজন ও ঝিনাইদহের একজন করোনা পজিটিভ।
খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. শেখ সাদিয়া মনোয়ারা ঊষা জানান, খুলনা জেলা ও মহানগরীতে নতুন করে ৩৩১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। খুলনায় মোট নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্তের হার ২৪ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টায় খুলনা জেলা ও মহানগরীর ৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
এদিকে, লকডাউন ঘোষণার পরও খুলনা মহানগরীর ৩টি থানা এলাকায় করোনা সংক্রমনের কমছে না। সিভিল সার্জন অফিসের দেয়া তথ্যমতে, খুলনা সদর থানায় ৫৯ শতাংশ; সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় ৩৫ শতাংশ এবং খালিশপুর থানা এলাকায় ৩৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে করোনা সংক্রমণ। এছাড়া রুপসা থানা এলাকায় ২০ শতাংশ সংক্রমনের হার পাওয়া গেছে।
একসপ্তাহের ব্যবধানে এসব এলাকায় সংক্রমণের হার কিছুটা বেড়েছে। স্বাস্থ্যবিধি কেউ মানছেন না। সামাজিক দূরত্বও উপেক্ষিত। অলিতে গলিতে খোলা রয়েছে দোকানপাট। দিনে-রাতে চলছে খোশগল্প, চায়ের দোকানে চলছে আড্ডা। যদিও খুলনা জেলা প্রশাসনের সাতটি মোবাইল টিম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করছে। তারপরও থামানো যাচ্ছে না সাধারণ মানুষের বেপরোয়া চলাফেরা।