সাতক্ষীরায় বেড়েই চলছে করোনার সংক্রমণ
ফাইল ছবি
ভারতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলো চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম সাতক্ষীরা। ক্রমেই এই জনপদে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলায় ১২ শতাংশ রোগীর দেহে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়। শেষ সপ্তাহে এসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯ শতাংশে। এক মাসেই ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায় করোনার সংক্রমণ। এতে ভয় আর আতঙ্কে রয়েছেন এই এলাকার মানুষ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাসপোর্টধারী যাত্রীরা সাতক্ষীরার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসার পর থেকে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। ভোমরা স্থলবন্দরে অবাধে ঢুকছে ভারতীয় পন্যবাহী ট্রাক। সেখানে অনেকটা দায়সারা ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। এছাড়া, বাজার ও বিপনীবিতানসহ জনসমাগম এলাকাগুলোতে অনেকটাই উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। এছাড়া, অবৈধভাবে ভারত থেকে আসা বাংলাদেশিদের কারণেও বাড়ছে সংক্রমণ।
জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ জানায়, মে মাসে ভারত থেকে আসা ৩শ’ ৩৭ জন পানপোর্ট যাত্রীর মধ্যে ১৭ জনের করোনা পজেটিভ ধরা পরে। তবে সেগুলো ভারতীয় ভেরিয়েন্ট কিনা তা জানতে নমুনা ঢাকায় আইডিসিআরে পাঠানো হয়।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেট ডা. কুদরোত ই খোদা জানান, ৮৭ সিটের করোনা ডেডিকেটেড সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মঙ্গলবার (পহেলা জুন) পর্যন্ত রোগী ভর্তি রয়েছে ১শ’ ১২ জন। যার মধ্যে করোনা পজেটিভ রোগী ৩২ জন। আর জেলা সদর হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছেন ২০ জন। এছাড়া, জেলার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ৭০ জন করোনা পজেটিভ রোগী ভর্তি। জনবল সঙ্কটের কারণে অতিরিক্ত রোগীর চা সামলানো ও সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় জায়গা সঙ্কটে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেককে বাধ্য হয়ে খুলনা ও রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় যেতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. হোসাইন, সাফায়েত জানান, ৩১ মে পর্যন্ত সাতক্ষীরায় এক হাজার ৫ শ’৮৫ জনের দেহে করোনা জীবানু পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৪৭ জন মারা যান। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে ২শ’ ৯ জন মারা গেছেন।
সাতক্ষীরায় প্রায় ২৫ লাখ লোকের বাস। এ জেলার সাথে ভারতের ১শ’ ৩৭ কিলোমিটার সীমান্ত পথ। সীমান্তে টহল বাড়িয়ে দেয়ার সাথে সাথে যারা মাদক ও গরু ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের বাড়ি ও গতিবিধি নজরদারিতে রাখার আহ্বান সুশীল সমাজের। আর করোনার ঢেউ সামাল দিতে জেলায় কঠোর লকডাউন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে মত বিশেষজ্ঞদের।