বাজেট বাস্তবায়নে ‘দ্বৈত প্রশাসন’ বিলোপ জরুরি

অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান
2021-06-01 03:16:07
বাজেট বাস্তবায়নে ‘দ্বৈত প্রশাসন’ বিলোপ জরুরি

প্রস্তাবিত বাজেট সংসদে উত্থাপনের পরই চমক বোঝা যাবে

সরকার এবারো করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেট পেশ করবে। প্রতিবছরই বাজেটের ব্যপ্তি বৃদ্ধি পায়, অঙ্কও বাড়ে। কিন্তু স্বাস্থ্যখাতে সেভাবে বাজেট বরাদ্ধ বাড়ে না। স্বাস্থ্যখাতের জনবল ঘাটতি দূর করে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কার্যকরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দিতে সরকার পদক্ষেপ নিবে বলে প্রত্যাশা করছি।

প্রস্তাবিত বাজেট সংসদে উত্থাপনের পরই আমরা বুঝতে পারব, সেখানো কী ধরনের চমক রয়েছে। বাজেটের সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এর যথাযথ ব্যবহার। বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেল। কিন্তু অর্থের যথাযথ ব্যবহার না হলে বাজেট খুব বেশি কাজে দেয় না। এজন্য বাজেট ব্যবস্থাপনা খুব জরুরি বিষয়। স্বাস্থ্য বিভাগের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো বরাদ্দের অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে, অপচয় ছাড়া আর কিছুই হবে না।

প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করলে বাজেটের অপচয় রোধ করা সম্ভব। শুধু কিনলে হবে না, যন্ত্রপাতির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রশিক্ষিত লোকবল তৈরি করতে হবে।

স্বাস্থ্যখাতে সজ্জন ব্যক্তিরা আসতে চান না। এর বড় কারণ, তারা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হন। যাদের কারণে হেনস্তার শিকার হন, তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এর বাইরে ‘দ্বৈত প্রশাসন’ থাকায় আরও বেশি সমস্যা হচ্ছে। দ্বৈত প্রশাসন ব্যবস্থা বিলোপ করা জরুরি। স্বাস্থ্যখাতে যে বরাদ্দ হয় বা এর অর্থ যত দেরিতে আসে, তাতে সে অর্থ অনেক সময়ই যথাযথ কাজে আসে না।

চিকিৎসা বিভাগের সবচেয়ে বড় পরিকল্পনা ছিল, জেলা হাসপাতালগুলোকে স্বয়ংসম্পূর্ণ জেনারেল হাসপাতালে পরিণত করা। সেখানে এখন বলা হচ্ছে, প্রতিটি জেলায় একটি করে মেডিকেল কলেজ হাসপতাল করবে। এখন প্রতিনিয়ত পরিকল্পনা পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে অর্থের অপচয় হচ্ছে।

সবচেয় বড় বিষয় হচ্ছে, স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হচ্ছে। কিন্তু এগুলো পরিচালনার জন্য কোনো লোকবল তৈরি করা হচ্ছে না। ফলে সেগুলো অব্যবহারিত থেকে যাচ্ছে। এমনকি লোকবল তৈরির কোনো পরিকল্পনা করা হচ্ছে না। এমন খবর বারবার প্রচার বা প্রকাশ পাওয়ার পরও সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

এজন্য দুর্নীতিরোধ করতে হলে অবশ্যই পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। শুধু দু-একজন কর্মকর্তা পরিবর্তন করে এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে না।

আমাদের দেশের মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থায় যারা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেন, তারা মৌলিক গবেষণা করে পৌঁছান না। এর আগেও যারা গেছেন, তাদেরও গবেষণার কাজ তেমন ছিল না। বর্তমানে গবেষণা বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তরুণদের মধ্যে এ ব্যাপারে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। ২০০৯ সালে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি ইনস্টিটিউট নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো কারণে সেটি এখন বন্ধ হয়ে আছে এবং কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না।


আরও দেখুন: