ব্ল্যাক ফাঙ্গাস চিকিৎসার প্রস্তুতির নির্দেশ বিএসএমএমইউ উপাচার্যের

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2021-05-24 08:33:03
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস চিকিৎসার প্রস্তুতির নির্দেশ বিএসএমএমইউ উপাচার্যের

সোমবার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানদের নিয়ে ‘বাংলাদেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসের সম্ভাব্য সংক্রমণ, প্রতিরোধ ও ম্যানেজমেন্ট’ সম্পর্কিত এক সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এই নির্দেশ দেন।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসের সম্ভাব্য সংক্রমণের বিষয়টি মাথায় রেখে এ রোগ প্রতিরোধ, ব্যবস্থাপনাসহ চিকিৎসার সামগ্রিক প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানদের নিয়ে ‘বাংলাদেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসের সম্ভাব্য সংক্রমণ, প্রতিরোধ ও ম্যানেজমেন্ট’ সম্পর্কিত এক সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন।

সভায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের বর্তমান অবস্থার পর্যালোচনা, ডায়াগনোসিস, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা বিষয়ক গাইডলাইন তৈরি, প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা রাখা, ঝুঁকিসমূহ চিহ্নিত করা, জনসচেতনা সৃষ্টিতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়।

অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বিশেষ ধরণের অনুবীক্ষণিক ছত্রাকের সংক্রমণজনিত বিভিন্ন রোগকে বোঝায়। এই ছত্রাক সর্বব্যাপী- মাটি, পানি ও বাতাসে ছড়িয়ে থাকলেও সংক্রমণ ক্ষমতা এতই কম যে ১ লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ১-২ জনের এই জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে।

‘কিন্তু কোনো কারণে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলেই কেবল এই সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে- যেটা ১ লাখে ২০ থেকে ৩০ জন হতে পারে’ যোগ করেন তিনি।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগী, বিশেষত কিটো অ্যাসিডোসিস আক্রান্তরা উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। তাছাড়া ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী, অতিরিক্ত ব্রড-স্পেকট্রাম অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, অত্যাধিক স্টেরয়েড গ্রহণ করা, কিডনি বা অন্য অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা রোগী এবং চরম অপুষ্টিজনিত রোগীদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হতে পারে। চামড়ার গভীর ক্ষত ও পোড়া ঘায়েও এই রোগ হতে দেখা যায়।

তিনি বলেন, ভারতের কোনো কোনো স্থানে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো এই রোগের প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া যায়নি। এই দেশে হোয়াইট ফাঙ্গাসে কোনো রোগীর আক্রান্ত হওয়ার খবরও পাওয়া যায়নি।

অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মিউকরমাইকোসিস আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত এবং সঠিক চিকিৎসা না করতে পারলে ৫০-৮০ ভাগ রোগী মৃত্যুবরণ করে থাকে। আর অভ্যন্তরীণ সংক্রমণের মৃত্যুর হার ১০০ ভাগের কাছাকাছি।

তিনি বলেন, সতর্কতা অবলম্বন করলে এই রোগ থেকে সবার নিরাপদ থাকা সম্ভব। যদি সংক্রমণ ঘটেও যথাযথ ওষুধ সঠিকভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে রোগীর আরোগ্য নিশ্চিত করা সম্ভব। সুতরাং আতঙ্ক নয়, সাবধানতা দরকার।

সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যানেসথেসিয়া, এ্যানালজেসিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম আখতারুজ্জামান, অটোল্যারিংগোলজি হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী, চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. জাফর খালেদ, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফ উলাহ মুন্সী, মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইমিউনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আহমেদ আবু সালেহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


আরও দেখুন: