সেদিন যেভাবে হত্যা করা হয়েছিলো ডা. মিলনকে

ফখরুল ইসলাম
2020-11-27 02:06:03
সেদিন যেভাবে হত্যা করা হয়েছিলো ডা. মিলনকে

স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলনের উত্তাল মুহূর্তের অন্যতম সংগঠক  শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ৩০ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ। ১৯৯০ সালের ২৭ এ নভেম্বর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ডা. মিলন।

ডা. মিলনের জন্ম ১৯৫৭ সালের ২১ আগস্ট ঢাকা হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। ১৯৭৩সালে তিনি সরকারী বিজ্ঞান কলেজ থেকে এসএসসি এবং ১৯৭৫ সালে নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৩৪ ব্যাচ এর ছাত্র ডা. মিলন ১৯৮৩ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

ডা. মিলন মেডিকেলে থাকা অবস্থাই ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৮২ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর, ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন(বিএমএ) এর যুগ্মসম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে বছরই তিনি বায়োকেমিস্ট্রিতে এমফিল ডিগ্রি লাভ করে ১৯৮৯ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে যোগদান করেন।  এরই মধ্যে দেশে সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু আন্দোলন গড়ে ওঠে এবং ডা. মিলন সেগুলোতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন বলে জানান সে সময়ের তাঁর সহযোদ্ধা ও তৎকালীন বিএমএ’র সম্পাদক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন।

১৯৯০ সালের ১০ ই অক্টোবর নাসিরুদ্দিন জিহাদ নামের এক ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেলে পুলিশ সেই মরদেহ ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা চালায়। এসময় ডা. মিলনের নেতৃত্বে ছাত্র ও চিকিৎসকেরা তাদের প্রতিহত করেন। আর সেদিনই সম্মিলিত সর্বদলীয় ছাত্রজোট গঠিত হয় যাতে ডা. মিলন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এভাবেই তিনি এই আন্দোলনের এক অন্যতম সংগঠক হিসেবে আবির্ভূত হন। যার কারণে এই চিকিৎসককে হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে হত্যাকাণ্ডের লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত করেন স্বৈরশাসকের পুলিশ বাহিনী।

১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর চলছিল দেশব্যাপী রাজপথ-রেলপথ অবরোধ আন্দোলন। সেদিনই বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের একটি সভায় যোগ দিতে রিকশাযোগে তৎকালীন পিজি হাসপাতালে যাচ্ছিলেন ডা. মিলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা অতিক্রমকালে সন্ত্রাসীরা তার ওপর গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢুলে পড়েন এই চিকিৎসক।

ডা. মিলনের মহান আত্মত্যাগের পর তার দেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে শায়িত করা হয়। দেশের জন্যে চরম ত্যাগ স্বীকারের স্বাক্ষর রেখে যাওয়া এই বীরের প্রতি রইলো ডক্টর টিভি পরিবারের পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা।


আরও দেখুন: