ডা. জোহরা বেগম কাজীকে নিয়ে গুগলের ডুডল

অনলাইন ডেস্ক
2020-10-15 02:10:27
ডা. জোহরা বেগম কাজীকে নিয়ে গুগলের ডুডল

অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুসলিম নারী চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. জোহরা বেগম কাজীর ১০৮তম জন্মদিনে ডুডল প্রকাশ করেছে গুগল।

বিখ্যাত ব্যক্তির জন্মদিন ও অঞ্চলভেদে ঐতিহাসিক দিনকে বিশেষভাবে স্মরণ করে থাকে গুগল। এদিনে গুগলের হোমপেজে বিশেষ লোগো প্রকাশ করা হয়, যাকে বলা হয় ডুডল।

আজ ১৫ অক্টোবর ডা. জোহরা বেগম কাজীর জন্মদিন। এই উপলক্ষ্যে গুগলে প্রবেশ করলেই দেখা যাচ্ছে বিশেষ এ ডুডলটি। এতে গুগলের অক্ষরগুলো লেখা হয়েছে বিশেষভাবে।

ডুডলে দেখা যাচ্ছে জোহরা বেগম কাজীর গলায় স্টেথসস্কোপ এবং মাথার উপর গাছের ছায়া। গায়ে জড়ানো হলুদ রংয়ের একটি পোশাক। বাংলাদেশ থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে গুগলে হোমগেজে গেলে চোখে পড়বে তাকে নিয়ে করা ডুডলটি।

ডা. জোহরা বেগম ১৯১২ সালের ১৫ অক্টোবর অবিভক্ত ভারতের মধ্য প্রদেশের রাজনান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন৷ তার পিতার নাম ডাক্তার কাজী আব্দুস সাত্তার ও মায়ের নাম মোসাম্মদ আঞ্জুমান নেসা। তার আদি পৈত্রিক নিবাস বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার গোপালপুর গ্রামে।

ডা. জোহরা বেগম ১৯২৯ সালে আলিগড় মুসলিম মহিলা স্কুল থেকে প্রথম বাঙালি মুসলিম আলিগড়িয়ান হিসাবে এসএসসি পাশ করেন। ২৩ বছর বয়সেই তিনি দিল্লীর 'লেডি হাডিং মেডিক্যাল কলেজ' থেকে ১৯৩৫ সালে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমবিবিএস পাস করেন। এজন্য পুরস্কার হিসেবে পান ভাইসরয় পদক।

১৯৩৫ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করার পর জোহরা বেগম কাজী কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। তিনি প্রথমে ইয়োথমাল ওয়েমেন্স (পাবলিক) হাসপাতালে ডাক্তার হিসেবে যোগদেন। এরপর বিলাসপুর সরকারি হসপিটালে যোগ দেন৷ পরবর্তীকালে মানুষের সেবার জন্য মহাত্মা গান্ধী নির্মাণ করেন সেবাগ্রাম। এই সেবাগ্রামে অবৈতনিকভাবে কাজ করেন জোহরা বেগম কাজী। এছাড়াও তিনি ভারতের বিভিন্ন বেসরকারী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডাক্তার হিসেবে নিরলসভাবে কাজ করেছেন।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর ডা. জোহরা বেগম ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে যোগ দেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় অবসর সময়ে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে অনারারি কর্নেল হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। মিডফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি গাইনোকোলজি বিভাগের প্রধান ও অনারারি প্রফেসর ছিলেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় অবসর সময়ে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে অনারারি কর্নেল হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে চাকরি থেকে অবসর নেবার পর বেশকিছু বছর হলিফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালে কনসালটেন্ট হিসাবে চিকিৎ‍সা সেবা প্রদান করেন। পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশ মেডিকেলে অনারারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন।

ঢাকা মেডিকেলে দায়িত্ব পালন করার সময় নারী রোগীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত কুসংস্কার ডা. জোহরা বেগমকে আহত করে। তিনি তাদের সাথে সরাসরি কথা বলে তাদের ভুল ধারণা দূর করতেন। তার কারণে পরবর্তীতে চিকিৎসা শাস্ত্রে এদেশে মেয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়।

জোহরা বেগম কাজী তখমা-ই-পাকিস্তান (১৯৬৪), একুশে পদক (২০০৮) ও বেগম রোকেয়া পদক (২০০২) অনেক স্বীকৃতি ও পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ২০০৭ সালের ৭ নভেম্বর মারা যান।


আরও দেখুন: