নিষিদ্ধ ২ শিক্ষার্থীকে ইন্টার্ন করার অনুমতি দিলো সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল
ডা. ফাহাদ আল মাহবুব ও ডা. আহসান হাবীব আকাশ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মারধরের অপরাধে দণ্ডিত ২ শিক্ষার্থীকে ইন্টার্নশিপ করার অনুমতি দিয়েছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজ কর্তৃপক্ষের হটকারী সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার ইন্টার্ন কো-অর্ডিনেটর ডা. নুরুজ্জামান স্বাক্ষরিত নোটিশে অপরাধের দায়ে দণ্ডিত শিক্ষার্থীদের নাম উল্লেখসহ ইন্টার্নশিপে যোগদান করতে বলা হয়েছে।
ইতোপূর্বে ৩ অক্টোবর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শফিউর রহমান স্বাক্ষরিত নোটিশে ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. ফাহাদ আল মাহবুবকে (সেশন ২০১৬-১৭, ব্যাচ এসএইচ-১২) ছাত্রবাস থেকে বহিষ্কার, এক বছরের জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত ও ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করার আদেশ দেয়া হয়। একই নোটিশে ডা. আহসান হাবীব আকাশকেও (সেশন ২০১৭-১৮, ব্যাচ এসএইচ-১৩) ছাত্রবাস থেকে বহিষ্কার, এক বছরের জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত ও ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করার আদেশ দেন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মারধরের অপরাধে দণ্ডিতদের ইন্টার্নশিপ করার অনুমতি দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে বয়েজ হোস্টেলে ১৬ই জুলাই দিবাগত রাতে যে নৃশংস মারধর হয় এটা হয়তো অনেকেরই অজানা। জুলাই ১৫ তারিখ রাত ৮ টা নাগাদ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, শসোমেক এর সকল শিক্ষার্থী দেশে চলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে শসোমেক হাসপাতালের সামনে একটা মানববন্ধন এবং র্যালি করার সিদ্ধান্ত নেন। এ জন্য কিছু স্লোগান ও ঠিক করেন তারা। যা শুধুই কোটা সংস্কার নিয়েই। এটার কিছু screenshot কিছু সৈনিকের মাধ্যমে তাদের পিও ত্রাণকর্তাদের কাছে চলে যায় এবং তারা আন্দোলন বানচাল করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেদিন রাত ১১টা নাগাদ মিটিং ডাকা হয় ছাত্রলীগ সভাপতি রাগিব শাহরিয়ার (Sh-11) এর রুমে। রুমে আরো উপস্থিত ছিলেন- " সৌরভ ঘোষ (Sh-7), ফাইজুর ফাইম (Sh-11), সামিউল সামি (Sh-11), তুষার হাবিব (Sh-12), ফাহাদ আল মাহবুব (Sh-12), আহসান হাবিব আকাশ (Sh-13), সাগর সেন (Sh-13), ওমর ফারুক (Sh-13), আহসানুল দিপ্ত (Sh-14), সৌভিক ভৌমিক জয় (Sh-14), এসকে ফরহাদ (ShD-8), আবু সাদাত তুষার (ShD-8) অমিত কিশোর (ShD-5)।
রাত তিনটায় তারা Sh-16 ব্যাচকে মিটিংয়ে ডাকেন। শুরুতেই সবার ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। তারপর এক এক করে সবার ফোন চেক করেন। আন্দোলনের সাথে যারা যুক্ত ছিলেন, তাদের এক এক করে সামনে ডাকা হয়। শুরুতে রাজিব সরদার, জাহিদ হাসান, আরিফ ইমন, ফারহান মাহমুদকে সামনে ডেকে এর কৈফিয়ত চায় তারা। এদের প্রত্যেককে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। মারধর করেন- তুষার হাবিব, আবু সাদা তুষার, ফরহাদ হোসেন, সাগর সেন, আহসান হাবিব আকাশ, আহসানুল দিপ্ত, সৌভিক ভৌমিক জয়, ওমর ফারুক। সবকিছু হয় রাগীব শাহরিয়ার ও সৌরভ ঘোষের নেতৃত্বে।
মারধর শেষ সবার মুখ থেকে স্বীকার করিয়ে নেওয়া হয় যে, হলের কেউ পরদিন আন্দোলনে যাবে না এবং তাদের সাথে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বানচাল করতে হবে। তবে পরদিন Sh-16 ব্যাচের কেউই তাদের সাথে যায়নি।