মস্তিষ্কের বুড়িয়ে যাওয়া রুখে দেবে যে ধরনের স্বভাব
মানসিক সক্ষমতার কিছু দিক বয়সের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হতে পা
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মস্তিষ্ক কীভাবে পরিবর্তিত হয় এবং সুস্থ মস্তিষ্কের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে কী কী উপাদান ও স্বভাব সম্পর্কিত তা নিয়ে গভীরতর ধারণা খুঁজে বের করেছেন গবেষকরা। এর মধ্যে শরীরচর্চা, তামাক বর্জন, মাতৃভাষার পাশাপাশি দ্বিতীয় আরেকটি ভাষায় কথা বলা, বাদ্যযন্ত্র বাজানোর স্বভাবও রয়েছে। পর্যালোচনামূলক নিবন্ধে বলা হয়েছে, মানসিক সক্ষমতার কিছু দিক বয়সের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হতে পারে। নিবন্ধটি বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) জেনোমিক প্রেস নিউইয়র্কের জেনোমিক সাইকিয়াট্রি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
স্কটল্যান্ডের লোথিয়ান বার্থ কোহর্টস বিভাগের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই গবেষণাপত্রটিতে বলা হয়, বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষের মানসিক সক্ষমতায় প্রায় ৫০ শতাংশ ভিন্নতা থাকতে পারে। কিছু মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি অন্যদের তুলনায় বেশি হয় যা তাদের শৈশবেই প্রকাশিত হয়। তবুও কিছু প্রাপ্তবয়স্কের জীবনধারণের ধরন, স্বভাব ও উন্নতর মানসিক কর্মক্ষমতা মস্তিষ্কের বুড়িয়ে যাওয়াকে রুখে দেয়। খবর সিএনএনের।
নতুন গবেষণাপত্রের লেখক এবং এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোথিয়ান বার্থ কোহর্ট স্টাডিজের পরিচালক সায়মন কক্স বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সক্রিয়, মনোযোগী ও স্বতঃস্ফুর্ত থাকা, ‘ভাস্কুলার’ ঝুঁকির কারণ (যেমন উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ধূমপান, বিএমআই) কম থাকা, দ্বিতীয় ভাষায় কথা বলা, বাদ্যযন্ত্র বাজানো এবং নিউরনের সক্রিয় অন্তঃসংযোগ মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে বাড়িয়ে তোলে।’
‘আমরা ধারাবাহিক উন্নতির কথা বলি, চমকপ্রদ কিছু নয়। এই নতুন ধারণাটি বৃদ্ধ বয়সে ভালো মানসিক সক্ষমতা বজায় রাখতে একটি কার্যকর পন্থা হতে পারে’, যোগ করেন কক্স। এর ফলে ৭০ থেকে ৮২ বছর বয়সের মধ্যে মানসিক অবনতির পার্থক্যের উল্লেখযোগ্য ২০ শতাংশ হতে পারে।
মস্তিষ্ক কি বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বুড়ো হয়, এই বিষয় নিয়ে এর আগেও অনেক গবেষণা হয়েছে। এই বিষয়ে নিউরন সাময়িকীতে হার্ভার্ড নিউরোলজিস্ট লেহ এইচ সমারভিলের নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। তিনি বলেন, মস্তিষ্ক ১০ বছরের মধ্যে পূর্ণ আকার ধারণ করে। কিন্তু যেসব নিউরন দিয়ে মস্তিষ্ক গঠিত, সেগুলো এরপরও পরিবর্তিত হয়ে থাকে। যখন মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের নিউরনের মধ্যে নতুন নতুন সংযোগ স্থাপিত হয়, তখন পার্শ্ববর্তী নিউরনের মধ্যে সংযোগে নতুনত্ব পায়। তবে এই পুনরাকৃতি ধারণ প্রক্রিয়ার গতি শেষ পর্যন্ত কমে আসে। এটি পরিণতি মস্তিষ্কের লক্ষণ। কিন্তু মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে এমন পরিবর্তনের ধারা বিভিন্ন গতিতে হয়ে থাকে। মস্তিষ্কের সম্মুখভাগের এমআরআই স্ক্যানে দেখা গেছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রেইনের পুনর্বিন্যাসের গতি কমে যায়। এমনকি বয়োজ্যেষ্ঠদের মস্তিষ্কেও নিউরনের নতুন নতুন সংযোগ সৃষ্টি হতে পারে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত শরীরচর্চার ফলে প্রবীণ বয়সেও মানুষের মস্তিষ্কে নিউরনের নতুন নতুন সংযোগ সক্রিয় হয়।