মানবদেহে নিপাহ ভাইরাসের ভ্যাক্সিনের ট্রায়াল শুরু

অনলাইন ডেস্ক
2024-01-14 12:54:00
মানবদেহে নিপাহ ভাইরাসের ভ্যাক্সিনের ট্রায়াল শুরু

নিপাহ ভাইরাসের ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু

প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাসের ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১১ জানুয়ারি নিপাহ ভাইরাসের মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কথা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশসহ নিপাহ ভাইরাস আক্রান্ত একাধিক দেশে এ টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হওয়ার কথা।

চ্যাডোক্স১ নিপাহ বি নামের টিকা উদ্ভাবন করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যানডেমিক সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট। মানবদেহে এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগে নেতৃত্ব দিচ্ছে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপ। 

এ রোগে আক্রান্তদের মধ্যে শতকরা  প্রায় ৭৫ জনই মারা যান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সবচেয়ে প্রাধান্যের তালিকায় থাকা একটি রোগ নিপাহ।

নিপাহ ভাইরাসের ভ্যাকসিনের মানবদেহে পরীক্ষার প্রধান এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাফিল্ড ডিপার্টমেন্ট অব মেডিসিনের অধ্যাপক ব্রায়ান আংগেস জানান, উচ্চ মৃত্যুহার এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার বৈশিষ্ট্যের জন্য নিপাহ ভাইরাসকে অতিমারি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগকে সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ মাইলস্টোন হিসেবে মনে করছেন তিনি। 

তাঁরমতে, ভ্যাকসিন প্রয়োগে সাফল্য পেলে নিপাহ রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করা সম্ভব হবে। বিশ্বকে ভবিষ্যতের অতিমারি থেকে রক্ষা করতে এ টিকা সহায়তা করতে পারে বলে আশা তাঁর। 

টিকার পরীক্ষা যেভাবে হবেঃ

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যানডেমিক সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটে নিপাহ ভাইরাস নিয়ে পিএইচডি গবেষণা করছেন বাংলাদেশের গবেষক মো. জাকিউল হাসান। তিনি বলেন, যে ৫১ জনের ওপর অক্সফোর্ডের টিকার পরীক্ষা হবে, তাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৫৫ বছর। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৫১ জনের মধ্যে ৬ জনকে নিপাহ ভাইরাসের টিকা চ্যাডোক্স১ নিপাহবি টিকার দুই ডোজ করে দেওয়া হবে। বাকি ৪৫ জনের মধ্যে কেউ কেউ এক ডোজ টিকা এবং এক ডোজ প্লাসিবো বা ছলৌষধ পাবেন। কোনো দল দুই ডোজ টিকা পাবে বা দুই ডোজ প্লাসিবো পাবে।

ছলৌষধের কোনো নিরাময়মূলক প্রভাব না থাকলেও এটিকে চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। সাধারণত রোগীকে মানসিকভাবে আশ্বস্ত করার জন্য এ ওষুধ দেওয়া হয়। নিপাহ ভাইরাসের পরীক্ষার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ছলৌষধ মূলত লবণাক্ত পানি।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শিম্পাঞ্জি অ্যাডেনোভাইরাস নামক ভাইরাসের একটি দুর্বল সংস্করণ দিয়ে এ নিপাহ ভাইরাসের টিকাটি তৈরি হয়েছে। শিম্পাঞ্জি অ্যাডেনোভাইরাস প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ভাইরাস। এটি নিপাহ ভাইরাসের সঙ্গে একেবারেই সম্পর্কিত নয়। শিম্পাঞ্জি অ্যাডেনোভাইরাস শিম্পাঞ্জিদের মধ্যে হালকা ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। জিনগত প্রকৌশল ব্যবহার করে দুর্বল শিম্পাঞ্জি অ্যাডেনোভাইরাস থেকে টিকা তৈরি করেছেন গবেষকেরা।

২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজের তত্ত্বাবধানে মডার্না নিপাহ ভাইরাসের একটি টিকার প্রাথমিক পর্যায়ের পরীক্ষা শুরু করেছিল।


আরও দেখুন: