গাজায় চরম ঝুঁকিতে ৮৪ হাজার অন্তঃসত্ত্বা : ডব্লিউএইচও
ইসরায়েলি হামলায় চরম ঝুঁকিতে আছেন অবরুদ্ধ গাজার ৮৪ হাজার অন্তঃসত্ত্বা
ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর অব্যাহত বিমান হামলা এবং সীমান্ত বন্ধ থাকায় চরম ঝুঁকিতে আছেন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার অন্তত ৮৪ হাজার অন্তঃসত্ত্বা। মঙ্গলবার সিএনএনের সাংবাদিক জন ভাউসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন জাতিসংঘের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস।
মার্গারেট হ্যারিস বলেন, গাজা-মিসর সীমান্তের রাফাহ ক্রসিংয়ে অপেক্ষারত ট্রাকগুলোতে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রীর পাশাপাশি ৭৮ কিউবিক মিটার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা উপকরণ রয়েছে। সেগুলো কমপক্ষে ৩ লাখ মানুষের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট। কিন্তু সীমান্ত বন্ধ থাকায় সেগুলো গাজায় পৌঁছাতে পারছে না। তাছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারছে না হাসপাতালগুলো। পাশাপাশি যেকোন সময় হামলার আতঙ্ক তো রয়েছেই।
হ্যারিস বলেন, সীমান্ত খুলে দিয়ে এই সহায়তা উপকরণগুলো গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। কারণ দিন দিন এই অপেক্ষা ভয়াবহ পীড়াদায়ক হয়ে উঠছে।
গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের অতর্কিত হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই উপত্যকায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। সেইসাথে গাজার সব সীমান্তপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় উপত্যকার পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ।
একদিকে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর বোমা বর্ষণ, আর অন্যদিকে পানি-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ব্যাপক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে গাজার সাধারণ বেসামরিক লোকজন। বিশেষ করে জ্বালানির অভাবে কয়েকদিন আগে গাজার একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবাও।
গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২ হাজার ৮১৭ জনে। এই নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু ও নারী রয়েছেন।
এ ছাড়াও গত ১০ দিনের হামলায় বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ।
মাত্র ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভূখণ্ড গাজার জনসংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ। দারিদ্র্য ও বেকারত্বপীড়িত এই জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ সরাসরি জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থার সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।