যাত্রীবেশী চিকিৎসকের সেবায় উড়ন্ত বিমানে বিপদমুক্ত অসুস্থ শিশু
আকাশে উড়ন্ত বিমান
উড়ন্ত বিমানে মাঝ আকাশে তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ৬ মাসের শিশুর। অসহায় মা তখন সন্তানকে বাঁচাতে বিমানের ক্রুদের কাছে অনুরোধ জানান। এরপর বিমান ক্রুদের ঘোষণা শুনে নিজ আসন থেকে শিশুটির পাশে চলে যান ২ জন চিকিৎসক যাত্রী। তাদের সেবায় বিপদমুক্ত হয় শিশুটি। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এমন ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন রাঁচি-দিল্লি ইন্ডিগো প্লেনের যাত্রীরা।
ইন্ডিগো সূত্র জানিয়েছে, শনিবার সকালে রাঁচি থেকে ছয় মাসের সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লিগামী প্লেনে উঠেছিলেন এক নারী। প্লেনটি যখন মাঝ আকাশে, তখন শিশুটির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরিস্থিতি খারাপ দিকে যাচ্ছে দেখে শিশুটিকে বাঁচাতে প্লেনে কোনো চিকিৎসক রয়েছেন কি না তা মাইকে ঘোষণা দিয়ে জানতে চান বিমানবালা। সেই ঘোষণা শুনে এগিয়ে আসেন চিকিৎসক ডা. নীতিন কুলকার্নি এবং ডা. মোজাম্মিল ফিরোজ। বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের প্রধান সচিব হলেও চিকিৎসকের কর্তব্য ভোলেননি ডা. কুলকার্নি। তাই রাঁচি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফিরোজের সঙ্গে তিনি শিশুটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। যদিও কাজটি সহজ ছিল না।
ডা. কুলকার্নি জানান, শিশুদের জন্য অক্সিজেন মাস্ক ছিল না। ফলে প্রাপ্তবয়স্কদের মাস্ক দিয়েই শিশুটিকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। শিশুটির মেডিকেল রিপোর্ট দেখে জানা যায়, সে জন্মগতভাবে হার্টের রোগী। চিকিৎসার জন্য তাকে দিল্লির এইমস হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। শিশুটির শ্বাসকষ্টের জন্য তৎক্ষণাৎ বিশেষ ইঞ্জেকশনের দরকার ছিল। যার মধ্যে একটি শিশুটির মায়ের কাছে ছিল। সেই ইঞ্জেকশন শিশুটিকে দেন ডা. কুলকার্নি। সেটা সেই সময় ভীষণ কাজে এসেছিল বলে তিনি জানান।
অক্সিমিটার না থাকায় শিশুটির শরীরে অক্সিজেন কতটা রয়েছে, তা বোঝা যাচ্ছিল না। তবে নানাভাবে শিশুটিকে সুস্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যান ডা. কুলকার্নি ও ডা. ফিরোজ। তাদের তৎপরতায় ধীরে-ধীরে শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল হয় এবং স্টেথোস্কোপের তার হৃৎস্পন্দন ধরা পড়ে। এ কাজে বিমানবালারাও নানাভাবে শিশুটির চিকিৎসায় সহায়তা করেন। সকাল ৯টা ২৫ মিনিট নাগাদ প্লেনটি দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর শিশুটিকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে এইমস হাসপাতালে পাঠানো হয়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নানা চেষ্টায় শিশুটি বিপদমুক্ত হওয়ায় তারা খুশি বলে জানান ডা. কুলকার্নি।
শিশুটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসায় ডা. নীতিন কুলকার্নি ও ডা. মোজাম্মিল ফিরোজকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্লেনের অন্য যাত্রীরা।