স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিনতে পারে না দেশের ১২ কোটি ১০ লাখ মানুষ
বাংলাদেশের ১২ কোটি ১০ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য নেই
বাংলাদেশের ১২ কোটি ১০ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কেনার সামর্থ্য নেই।টেকসই উন্নয়ন অভিষ্টের (এসডিজি) দ্বিতীয় লক্ষ্য হিসেবে বিশ্বজুড়ে ক্ষুধামুক্তির বিষয়টিকে সামনে রেখে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিনতে পারে না এমন দেশের তালিকা করেছে বিশ্বব্যাংক। সেই তালিকার ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম।
তালিকায় প্রথম পাঁচটি দেশ হল : ভারত, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও চীন। দেশগুলোর মধ্যে ভারতে ৯৭ কোটি ৩০ লাখ মানুষ মানসম্পন্ন খাবার পায় না। ভারতে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠীর এ অবস্থা।
দ্বিতীয় স্থানে আছে আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া। দেশটির প্রায় ১৯ কোটি ৮০ লাখ মানুষ পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার পায় না। তৃতীয় স্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়ায় ১৮ কোটি ৯০ লাখ মানুষ মানসম্মত খাবার পায় না।
চতুর্থ স্থানে থাকা পাকিস্তানে ১৮ কোটি ৪০ লাখ মানুষের একই দশা। পঞ্চমে রয়েছে বিশ্বের সব চেয়ে বেশি মানুষের দেশ চীন। দেশটির প্রায় ১৭ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিনতে পারে না। আর ষষ্ঠ বাংলাদেশের ১২ কোটি ১০ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিনতে পারে না।
বাংলাদেশের চেয়ে তুলনামূলক একটু ভালো আছে যে সব দেশ; যে সব দেশের স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য কিনতে পারা বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। এসব দেশের মধ্যে ইথিওপিয়ায় প্রায় ১০ কোটি, কঙ্গোতে ৮ কোটি, ফিলিপাইনে সাড়ে সাত কোটি ও মিসরে ৭ কোটি ৪০ লাখ মানুষের এমন দশা। এর বাইরে পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালে আড়াই কোটি মানুষ এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কায় এক কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পায় না।
জীবন ধারনের মতো খাদ্যের পরই মানুষের মানসম্মত খাদ্যের চাহিদা তৈরি হয়। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের অন্যতম অগ্রাধিকার হলো মানসম্মত খাবার নিশ্চিত করা। স্বাস্থ্যসম্মত বা মানসম্মত খাবার কেনার সঙ্গে সক্ষমতা বা অভিগম্যতা, সুশাসন ও অভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশ দারিদ্র কমিয়ে আনলেও পুষ্টি মানসম্পন্ন খাবার খাওয়া বা মান সম্মত খাবার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। খাদ্যে ভেজাল ও পরিচ্ছন্নতার ইস্যু এখনো রয়ে গেছে।
এ ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাব ও নিয়ন্ত্রণের সমস্যা রয়ে গেছে। আমরা দেখি রমজান এলেই ধর-পাকড় হয়। খাদ্যমান নিয়ে কথা ওঠে। রমজান চলে গেলে আবার আগের মতো অবস্থা তৈরি হয়। আগের মত আবার দাম বাড়ে, আবার ভেজাল খাদ্য পরিবেশন শুরু হয়, আবার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য বিক্রি করা হয়। এজন্য স্বাস্থ্য সচেতনতার বাড়াতে হবে। এবং মান নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়াতে হবে।
মানসম্মত খাদ্য গ্রহণের বিষয়টি পুরোপুরি অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে না। এ ক্ষেত্রে সুশাসন ও অভ্যাস একটি বড় বিষয়। যে কারণেও বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অর্থনৈতিক অবস্থার দেশও মানসম্মত খাদ্য পায় না।