করোনায় এখনও চার মিনিটে প্রাণ কাড়ছে একজনের

ডক্টর টিভি ডেস্ক
2023-05-24 16:42:39
করোনায় এখনও চার মিনিটে প্রাণ কাড়ছে একজনের

বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর কারণ হিসেবে করোনা এখনও নেতৃস্থানীয় পর্যায়েই রয়ে গেছে

তিন বছরের বেশি সময় পর করোনা মহামারীর বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হয়েছে। দেশে দেশে সাধারণ রোগের মতোই দেখা হচ্ছে এক সময়ে বিশ্বকে থমেক দেওয়া ভাইরাসটিকে। এখনও প্রতি চার মিনিটে অন্তত একজন করোনায় মারা যাচ্ছেন। খবর এনডিটিভির।

বেশিরভাগ মানুষের জন্য করোনাভাইরাসের হুমকি কমে গেলেও বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যার একটি অংশের জন্য এটি এখনও অত্যন্ত বিপজ্জনক। সংক্রামক ভাইরাসটিকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ বা মোকাবিলা করা যায়, তা বর্তমানে বড় ধরনের প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে। কারণ বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর কারণ হিসেবে করোনা এখনও নেতৃস্থানীয় পর্যায়েই রয়ে গেছে।

গত বছর হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের পর কভিডে আক্রান্ত হয়েই যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। অর্থাৎ মৃত্যুর কারণ হিসেবে গত বছর উত্তর আমেরিকার দেশটিতে কভিড ছিল তৃতীয় অবস্থানে।

মৃত্যুর অন্যান্য সাধারণ কারণ যেমন ধূমপান এবং সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা আইনের দিকে মনোযোগ দেওয়া হলেও করোনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদরা ক্ষতি কমানোর উপায়গুলোর দিকে তেমন মনোযোগ দিচ্ছেন না। বাধ্যতামূলক টিকা বা আবদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরার কথাও এখন আর গুরুত্ব দিয়ে বলা হচ্ছে না।

সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বর্তমানে বিশ্বে প্রতি চার মিনিটে একজন করে কভিড আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু ঘটছে। মৃতদের মধ্যে সবেচেয়ে বেশি আছেন বয়স্করা। আর এ তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর তৈরি হয়েছে নতুন করে আতঙ্ক।

মিসৌরির ভেটেরান্স অ্যাফেয়ার্স সেন্ট লুইস হেলথ কেয়ার সিস্টেমের ক্লিনিকাল এপিডেমিওলজি সেন্টারের পরিচালক জিয়াদ আল-আলী বলেছেন, ‘বর্তমান বিশ্বের সাধারণ আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে, মহামারীকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া এবং কভিডকে আমাদের পেছনে রাখা। কিন্তু এ সমস্যা বা পরিস্থিতিকে স্বীকার করতে অনিচ্ছুক আমরা।’ তিনি আরও বলেন, ‘কভিড এখনও অনেক লোককে সংক্রমিত করছে এবং মৃত্যু ঘটাচ্ছে। আমাদের কাছে এটি কমিয়ে আনার উপায়ও রয়েছে। টিকাদান জোরদার করতে হবে।’

অবশ্য করোনা মহামারী পেছনে ফেলে বিশ্বজুড়ে বর্তমানে কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি মাসের শুরুতে করোনাভাইরাস মহামারী আর ‘বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা’ নয় বলে ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়।

করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে। এরপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছিল সংস্থাটি।

ডব্লিউএইচও প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রিয়াসুস বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার সমাপ্তি ঘোষণা করা হলেও তা ভাইরাসের স্বাস্থ্য হুমকির সমাপ্তি নয়। করোনার আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট উদ্ভূত হওয়ার হুমকি এখনও রয়ে গেছে, যা নতুন করে এই রোগ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়াতে পারে এবং নতুন করে আরও রোগজীবাণু উদ্ভূত হওয়ার মারাত্মক হুমকি রয়ে গেছে।’


আরও দেখুন: