মানুষের রোগ কেন হয়, নতুন গবেষণায় মিলছে তথ্য

ডক্টর টিভি ডেস্ক
2023-05-21 15:18:16
মানুষের রোগ কেন হয়, নতুন গবেষণায় মিলছে তথ্য

গবেষণায় ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী অংশ নিচ্ছেন, যাদের দেহ ও মস্তিষ্ক স্ক্যান করা হয়

মানুষের রোগ কেন হয়, কী করে তা ঠেকানো যেতে পারে– তা জানতে হাজার হাজার মানবদেহ ও মস্তিষ্কের ওপর নতুন এক গবেষণা চালাচ্ছে যুক্তরাজ্যে। এতে ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী অংশ নিচ্ছেন, যাদের দেহ ও মস্তিষ্ক স্ক্যান করে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কী পরিবর্তন হয়, তা আরও ভালোভাবে জানার চেষ্টা করা হবে।

বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, এ গবেষণার ফলে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিলোপ পাবার মতো রোগ কীভাবে আগেভাগে চিহ্নিত ও প্রতিরোধ বা চিকিৎসা করা যায়, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

গবেষণার ফলে ইতিমধ্যেই একটি জেনেটিক পরীক্ষা উদ্ভাবিত হয়েছে, যা দিয়ে কোনো মানুষ যদি হৃদরোগের বর্ধিত ঝুঁকি নিয়ে জন্মান, তা শনাক্ত করা যেতে পারে। বিবিসির সংবাদদাতা ফার্গাস ওয়ালশ নিজে এ গবেষণায় অংশ নিয়েছেন। ৯ বছর আগে তাকে প্রথমবার স্ক্যান করা হয়েছিল এবং এবার দ্বিতীয়বারের মতো তার মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড, চোখ এবং হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করা হবে।

গবেষণায় অংশ নেওয়া সব স্বেচ্ছাসেবীর উপাত্ত যুক্তরাজ্যের একটি বায়োব্যাংকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে এবং ৯০টির বেশি দেশের গবেষকরা স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণায় এ তথ্যভাণ্ডার ব্যবহার করছেন।

কী পরীক্ষা করা হয়
একজন মানুষের দুদফায় কয়েক বছরের ব্যবধানে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এমআরআই করা হয়, অর্থাৎ শব্দ তরঙ্গ দিয়ে তার দেহের বিভিন্ন অংশের স্ক্যান করা হয়। এতে ডিমেনশিয়া, ক্যান্সার ও হৃদরোগের মতো রোগ চিহ্নিত ও প্রতিরোধ করার নতুন নতুন পথের সন্ধান পাওয়া যায়।

এ প্রকল্পের প্রধান বিজ্ঞানী অধ্যাপক নাওমি অ্যালেন বলেছেন, ‘আমাদের যত বয়স বাড়ছে, তার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রত্যঙ্গগুলোতে কী পরিবর্তন হচ্ছে, তা দেখতে পারবেন গবেষকরা। ফলে রোগের লক্ষণ দেখা দেবার বা সাধারণ ডাক্তারি পরীক্ষায় তা চিহ্নিত হবার অনেক বছর আগেই একেকটি রোগের চিহ্নগুলো শনাক্ত করতে তা সহায়ক হবে।’

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ গবেষণা থেকে আরও নানা তথ্য জানা যেতে পারে। বায়োব্যাংকের কর্মকর্তা এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক পল ম্যাথুজ বলেছেন, ‘কোনো কোনো মানুষের মধ্যে কেন অন্যদের চেয়ে কিছু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে, বা একটি বিশেষ চিকিৎসা কোনো রোগীর দেহে সবচেয়ে ভালোভাবে কাজ করবে এসব বিষয়ে জানা সম্ভব হবে ।’

যেভাবে চলছে গবেষণা
ইউকে বায়োব্যাংক প্রথম চালু হয় ২০০৬ সালে। প্রথমে এতে ৫ লাখ মানুষের জিনোম বা সম্পূর্ণ ডিএনএ সিকোয়েন্স, স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্য এবং জেনেটিক নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়। ইমেজিং বা স্ক্যানিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে। এখানে অংশগ্রহণকারীদের সবাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্যসেবার কথা ভেবেই এ গবেষণায় অংশ নিয়েছেন।

বায়োব্যাংকের তথ্য ব্যবহার করে গবেষকরা কোনো ব্যক্তির করোনারি হৃদরোগ হবার ঝুঁকি বেশি কিনা তা বের করার একটি জেনেটিক টেস্ট উদ্ভাবন করেছেন।


আরও দেখুন: