৪৮ বছর পর হাসপাতাল থেকে সন্তানের লাশ বুঝে পেলেন মা
দীর্ঘ ৪৮ বছর পর সন্তানের মরদেহ বুঝে পেলেন লায়দিয়া রিড
১৯৭৫ সালে স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গের হাসপাতালে জন্ম নেয় এক ছেলে শিশু। জন্মের মাত্র এক সপ্তাহ পরই হাসপাতালে মারা যায় সে। সে সময় নবজাতকটি মরদেহ বুঝিয়ে না দিয়ে সেটি গবেষণার জন্য রেখে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবশেষে দীর্ঘ ৪৮ বছর পর সন্তানের মরদেহ বুঝে পেলেন লায়দিয়া রিড নামের এক মা।
আজ শুক্রবার (১৭ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জন্মের এক সপ্তাহ পর মারা যায় লায়দিয়া রিডের সন্তান গ্যারি। লায়দিয়ার দাবি, গ্যারির মৃত্যুর কয়েকদিন পর যখন তিনি তার মরদেহ দেখতে চান, তখন তাকে অন্য আরেকটি শিশুর দেহ দেখানো হয়। এমনকি তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গ্যারির ময়না তদন্ত করা হয়। এরপরই মা লায়দিয়ার সন্দেহ হয়, ময়না তদন্তের নামে তার ছেলের অঙ্গ-প্রতঙ্গ রেখে দেওয়া হয়। এবং তার সন্দেহ সত্যিও হয়।
এরপর কয়েক বছর পর তিনি বুঝতে পারেন তার ছেলের অঙ্গ-প্রতঙ্গই শুধুমাত্র রেখে দেওয়া হয়নি। পুরো শরীরটিই রেখে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়টি নিশ্চিত হতে আদালতের দারস্থ হন তিনি। এরপর আদালতের নির্দেশে ২০১৭ সালে গ্যারির কবর খোঁড়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিশেষজ্ঞরা জানান, ওই কবরের ভেতর কোনো মানব দেহ কখনোই ছিল না। এরপরই হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য রাখা গ্যারির দেহাবশেষ ফিরে পেতে লড়াই শুরু করেন তিনি।
অবশেষ ২০২৩ সালের মার্চ মাসে এসে তার ছেলের অঙ্গ-প্রতঙ্গ এবং শরীরের বাকি অংশ ফেরত দিতে সম্মত হয়েছে এডিনবার্গ রয়্যাল হাসপাতাল।
এদিকে লায়দিয়া রিডের কারণেই প্রকাশ্যে এসেছে কীভাবে অবৈধভাবে স্কটল্যান্ডের হাসপাতালগুলো পরিবারকে না জানিয়ে গবেষণার জন্য শিশুদের মরদেহ সংরক্ষণ এবং অঙ্গ-প্রতঙ্গ কেটে রেখে দিত।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৭০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত স্কটল্যান্ডের হাসপাতালগুলো ৬ হাজার অঙ্গ-প্রতঙ্গ এবং টিস্যু সংরক্ষণ করেছিল।
ইংল্যান্ডের লিভারপুলের একটি হাসপাতালে অবৈধভাবে অঙ্গ-প্রতঙ্গ রেখে দেওয়ার বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পরই স্কটল্যান্ডও স্বীকার করে তারাও এ কাজ করেছে।
সূত্র: বিবিসি