বিরল রোগে পাকিস্তানের সাবেক সেনাশাসকের মৃত্যু
২০১৮ সালে প্রথম পারভেজ মোশাররফের অসুস্থতার কথা জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়। তিনি বিরল রোগ অ্যামাইলয়েডোসিসে ভুগছিলেন
পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ মারা গেছেন। দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৯ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে পাকিস্তানের গণমাধ্যম জিও নিউজ।
পাকিস্তানের এই সাবেক সামরিক শাসক দুবাইয়ের একটি আমেরিকান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি বিরল রোগ অ্যামাইলয়েডোসিসে ভুগছিলেন।
২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো পারভেজ মোশাররফের অসুস্থতার কথা জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়। তখন তার দল এপিএমএল জানিয়েছিল, সাবেক এ সেনাপ্রধান বিরল রোগ অ্যামাইলয়েডোসিসে ভুগছেন।
মানবশরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও টিস্যুতে অ্যামাইলয়েড নামক একটি অস্বাভাবিক প্রোটিন তৈরির কারণে অ্যামাইলয়েডোসিস রোগ হয়। এ রোগ হলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও টিস্যুগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।
মোশাররফ অবিভক্ত ভারতের দিল্লিতে ১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৬১ সালের ১৯ এপ্রিল পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাকুল থেকে কমিশন পান। পরে ১৯৯৮ সালে মোশাররফ জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে, এর আগে গত বছরের জুনে পারভেজ মোশাররফ গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সে সময় তিনি ভেন্টিলেটরে ছিলেন বলেও গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। এমনকি তার মৃত্যুর গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে তা নাকচ করা হয়েছিল।
মোশাররফের অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তার পরিবার তখন একটি বিবৃতি দিয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল, তিনি ভেন্টিলেটরে নেই। অসুস্থতাজনিত (অ্যামাইলয়েডোসিস) জটিলতার কারণে তিনি গত তিন সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন। শারীরিক অবস্থা ক্রমশ জটিলতর হচ্ছে এবং বিভিন্ন অঙ্গ অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। সেই সব অঙ্গ আর কার্যকর করে তোলা সম্ভব নয়।
অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা নেওয়া মোশাররফ ২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর সংবিধান স্থগিত করেছিলেন। এর জন্য ২০১৪ সালের ৩০ মার্চ তাকে অভিযুক্ত করা হয়। ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত।
২০১৬ সালের মার্চে চিকিৎসার জন্য দুবাই যান সাবেক সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফ। এরপর আর তিনি পাকিস্তানে ফিরে আসেননি।