করোনা মোকাবিলার সফলতার পুরস্কার প্রধানমন্ত্রী
কভিড মহামারীর সময় সরকারের পদক্ষেপ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়ে হিপকিন্স একটি পারিবারিক নাম হয়ে ওঠেন
ক্রিস হিপকিন্স। নিউজিল্যান্ডের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি। তিনি আবারও আলোচনায় এসেছেন। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। সব ঠিক থাকলে জেসিন্ডা অরডার্নের স্থলাভিষিক্ত হবেন ক্রিস হিপকিন্স।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) লেবার পার্টির নেতৃত্বের জন্য একমাত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ক্রিস। এর ফলে করোনা মহামারীর সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ক্রিসের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিশ্চিত হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রবিবার (২২ জানুয়ারি) লেবার দলীয় ৬৪ আইনপ্রণেতার বা ককাসের বৈঠকে ক্রিসের (৪৪) নেতা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
লেবার পার্টি দলের নেতৃত্বের জন্য একমাত্র প্রার্থী হিসেবে হিপকিন্সের নাম ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা অত্যন্ত শক্তিশালী একটি দল। আমরা ঐক্যের মধ্য দিয়ে এ ধারা বজায় রেখেছি এবং তা অব্যাহত থাকবে। এ ধরনের চমৎকার লোকদের একটি দলের সঙ্গে কাজ করতে পেরে নিজেকে সত্যি খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। নিউজিল্যান্ডের জনগণের সেবা করার সত্যিকারের মনোভাব আছে এদের।’
গত ১৯ জানুয়ারি এক অবাক করা ঘোষণায় নিউজিল্যান্ডের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অরডার্ন জানান, দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ‘আর ক্ষমতা নেই তার’। আর সে কারণেই তার সরে দাঁড়ানো উচিত।
ক্রিস হিপকিন্স ২০০৮ সালে প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২০ সালের জুলাইয়ে তিনি অরডার্ন সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। ওই বছরের নভেম্বরে কভিড মোকাবেলাবিষয়ক মন্ত্রী নিযুক্ত হন। মহামারীর সময় নিউজিল্যান্ড সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়ে হিপকিন্স একটি পারিবারিক নাম হয়ে ওঠেন।
করোনা নিয়ন্ত্রণে সফল দেশগুলোর মধ্যে নিউজিল্যান্ড অন্যতম। আর এ কার্যক্রমের কাণ্ডারি বলা হয় ক্রিস হিপকিন্সকে। করোনা মোকাবিলায় তার নেওয়া পদক্ষেপ দারুণ প্রশংসিত হয়। বর্তমানে ক্রিস হিপকিন্স পুলিশ, শিক্ষা ও জনসেবা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি পার্লামেন্ট নেতাও তিনি।
আইনপ্রণেতা হিসেবে পার্লামেন্টে আসার আগে ক্রিস শিক্ষামন্ত্রীর উপদেষ্টা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্কের কার্যালয়ে কাজ করেছেন।
ক্রিস হিপকিন্স লেবার দলের নেতা নির্বাচিত হলে অরডার্ন ৭ ফেব্রুয়ারি গভর্নর জেনারেলের কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করবেন। তখন গভর্নর জেনারেল রাজা তৃতীয় চার্লসের পক্ষ থেকে হিপকিন্সকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিবেন।
তবে হিপকিন্স কতদিন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন তা নির্ভর করছে অক্টোবরের সাধারণ নির্বাচনের ওপর। যদি নির্বাচনে লেবার পার্টির পরাজয় ঘটে, তবে তিনি মাত্র আট মাস এ দায়িত্বে থাকবেন। আর যদি জিতে যায়, তাহলে দায়িত্ব দীর্ঘায়িত হবে।
মতামত জরিপগুলোতে দেখা গেছে, মুদ্রাস্ফীতি ও সামাজিক বৈষম্য বৃদ্ধির কারণে অরডার্নের জনপ্রিয়তা সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। এতে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির জনসমর্থনও যে তলানিতে এসে ঠেকেছে, এ ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আসছে নির্বাচনে হিপকিন্স ও তার দলকে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৭ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে প্রথম নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হন জেসিন্ডা। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিউজিল্যান্ডের দায়িত্ব নেন। এ ছাড়া তিনি বিশ্বে দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি ক্ষমতায় থাকাকালে মা হয়েছেন। এ রেকর্ডে প্রথমস্থানে রয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো।