ভারতীয় সিরাপ খেয়ে উজবেকিস্তানে ১৮ শিশুর মৃত্যু
উজবেকিস্তানের আগে গাম্বিয়ায় ভারতীয় সিরাপ খেয়ে অন্তত ৭০ শিশুর মৃত্যু হয়েছিল
গাম্বিয়ার পর উজবেকিস্তানের কর্তৃপক্ষও ভারতে বানানো সিরাপে অন্তত ১৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। মধ্য এশিয়ার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ভারতের ওষুধ নির্মাতা কোম্পানি মেরিয়ন বায়োটেক প্রাইভেট লিমিটেডের বানানো সিরাপ খেয়ে তাদের শিশুদের মৃত্যু হয়েছে। খবর আল-জাজিরার।
কোম্পানির ওয়েবসাইটে সিরাপটি ঠান্ডা ও জ্বরের লক্ষণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় বলে বলা হয়েছিল। অথচ ডক-১ ম্যাক্স সিরাপ খাওয়া ২১ শিশুর মধ্যে ১৮ শিশুই তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগে মারা গেছে, বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, কুয়ারাম্যাক্স মেডিকেল এলএলসি নামের একটি কোম্পানি উজবেকিস্তানে এ সিরাপ আমদানি করেছে। ওষুধটির একটি ব্যাচে ইথিলিন গ্লাইকল পাওয়া গেছে, উজবেকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যাকে বিষাক্ত উপকরণ বলছে।
মন্ত্রণালয় জানায়, চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া, বাবা-মা নিজেরাই কিংবা ফার্মেসির দোকানের লোকজনের পরামর্শে, বাড়িতেই শিশুদের সিরাপটি খাওয়ানো হয়েছিল। তাদের জন্য নির্ধারিত যে ডোজ, তারা তার চেয়ে বেশি পরিমাণে ওই ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল।
বিষাক্ত উপকরণসমৃদ্ধ ব্যাচটির ওষুধ খেয়ে, স্বাভাবিক ডোজের চেয়ে বেশি খাওয়ায়, নাকি উভয় কারণে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তাৎক্ষণিকভাবে তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মেরিয়ন বায়োটেক, কুয়ারাম্যাক্স মেডিকেল ও ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ভারত সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ব্যাপারটি খতিয়ে দেখছে।
ওষুধের মান নিশ্চিতে ভারত মঙ্গলবার দেশটির বেশকিছু ওষুধ নির্মাণ কারখানা পরিদর্শন শুরু করেছে।
উজবেকিস্তানের আগে গাম্বিয়ায় শিশু মৃত্যুর ঘটনায়ও ভারতে বানানো সিরাপের নাম উঠে এসেছিল। দিল্লিভিত্তিক মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বানানো ঠান্ডা ও কাশির সিরাপে অন্তত ৭০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে আফ্রিকার দেশটি।
যদিও ভারতের সরকার এবং মেডেন উভয়েই পরে গাম্বিয়ায় শিশু মৃত্যুতে তাদের ওষুধের দোষ অস্বীকার করেছে।
উজবেকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যথোপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়া এবং শিশু মৃত্যুর ঘটনা সময়মতো খতিয়ে না দেখাজনিত অবহেলার কারণে তারা তাদের ৭ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে।
কিছু ‘বিশেষজ্ঞের’ বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ওই ‘বিশেষজ্ঞদের’ ভূমিকা কী ছিল, তা খোলাসা করেনি তারা।
মধ্য এশিয়ার দেশটি এরই মধ্যে সব ওষুধের দোকান থেকে ডক-১ ম্যাক্স ট্যাবলেট ও সিরাপ সরিয়ে নিয়েছে।