চীনে চেনা-জানা সবারই করোনা!
বয়স্করা গণহারে মারা যাচ্ছেন। মর্গ থেকে মরদেহ সরিয়ে কুল পাওয়া যাচ্ছে না
‘যদি এই মুহূর্তে চীনের বাইরে থাকেন, তাহলে ফিরে আসবেন না’- এই আহ্বান চীনের একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন এক ব্যক্তি। সম্প্রতি চীনে ফিরেছেন তিনি। তার ভাষায়, ‘আমি কয়েক বছর দেশের বাইরে ছিলাম। এ সময় একবারের জন্যও আমার করোনা হয়নি। তবে দেশে ফেরার কয়েক দিনের মধ্যেই আক্রান্ত হলাম। আমার চেনা-পরিচিত সবার করোনা হচ্ছে এবং শরীরে জ্বর।’
চীনে হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। হঠাৎ ভাইরাসটির এই বাড়বাড়ন্তের পেছনে সপ্তাহ দুই আগে বিক্ষোভের মুখে কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে।
পরিস্থিতি এখন এতটাই খারাপ যে দেশটির হাসপাতালগুলো রোগীর চাপ সামলাতে পারছে না। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, চীনের বেশিরভাগ হাসপাতাল রোগীতে পূর্ণ। বয়স্করা গণহারে মারা যাচ্ছেন। মর্গ থেকে মরদেহ সরিয়ে কুল পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যেই হাসপাতালে জ্বরের ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
শরীরে করোনা নিয়ে চীনারা কীভাবে দিন পার করছেন, গত দুই সপ্তাহে এমন সব ভিডিওর বন্যা বয়ে গেছে দেশটির ইন্টারনেটে। চীনের গণমাধ্যমের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, তরুণ-তরুণীরা তাদের অসুস্থ বাবা-মায়ের জন্য খাবার ও পানি নিয়ে যাচ্ছেন। একই বাড়ির মধ্যে থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে অনেককে দেখা গেছে ভিন্ন সব কৌশল বেছে নিতে। অনেকেই আবার ব্যথানাশক ওষুধ কিনে তা পৌঁছে দিচ্ছেন অসুস্থ মানুষের কাছে।
এরই মধ্যে চিকিৎসাকর্মী ও করোনা মোকাবিলায় কাজ করা সম্মুখসারির লোকজনের সঙ্গে সদয় ব্যবহার করতে চীনের নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো।
চীনা সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অবসরে গেছেন এমন হাজার হাজার চিকিৎসাকর্মীকে সম্মুখসারিতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে দেখা গেছে, রোগীদের লম্বা লাইন। সব মিলিয়ে ব্যাপক চাপে রয়েছে হাসপাতালগুলো।