৬৬ শিশুর মৃত্যুর পর ভারতীয় সিরাপের উৎপাদন বন্ধ
মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস উৎপাদন ও পরীক্ষামূলক কার্যক্রমজুড়ে নিয়ম ভেঙেছে বলে ভারতীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ প্রমাণ পেয়েছে
আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত কফ সিরাপের উৎপাদন বন্ধ রাখার জন্য ভারতীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস উৎপাদন ও পরীক্ষামূলক কার্যক্রমজুড়ে নিয়ম ভেঙেছে বলে ভারতীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ প্রমাণ পেয়েছে।
৬৬ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই কোম্পানিটির চারটি কফ সিরাপের ওপর বৈশ্বিক সতর্কতা জারি করে। বিষয়টি নিয়ে এখন ভারত ও গাম্বিয়ায় তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ভারতীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অনেকগুলো নিরাপত্তা বিধি ভঙ্গ করেছে এমন প্রমাণ পাওয়ার পর তারা নয়া দিল্লিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির সব উৎপাদন কার্যক্রম স্থগিত করেছে।
তবে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য বিবিসির অনুরোধে মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
গত সপ্তাহে ওষুধ কোম্পানিটি বলেছিল, গণমাধ্যমে গাম্বিয়ায় শিশু মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা হতবাক হয়েছে এবং এ ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত।
গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মেডেনের চারটি ব্র্যান্ডের কফ সিরাপ নিয়ে বৈশ্বিক সতর্কতা জারি করে বলেছে, সেগুলোর সঙ্গে কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার এবং জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে শিশুদের মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আরও সতর্ক করে বলেছে, এই পণ্যগুলো গাম্বিয়া ছাড়াও ‘অন্য দেশ ও অঞ্চলে অনানুষ্ঠানিক বাজারের মাধ্যমে বিতরণ করা হতে পারে’।
ভারতের মেডেন ফার্মাসিউটিকেলের বানানো কফ সিরাপ চারটি হলো- প্রোমেথাজাইন ওরাল সল্যুশন, কোফেক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, ম্যাকফ বেবি কফ সিরাপ ও ম্যাগ্রিপ এন কোল্ড সিরাপ।
গাম্বিয়ার পুলিশ শিশুদের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। দেশটি এ ঘটনার বিচার দাবি করেছে। গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আদামা ব্যারো প্রতিজ্ঞা করে বলেছেন, যে কারণে হৃদয়বিদারক এ ঘটনা ঘটেছে তিনি ‘তার শেষ দেখে ছাড়বেন’। একই সঙ্গে তিনি ‘ওষুধ ও খাদ্যের মান যাচাইয়ের জন্য’ জাতীয় পর্যায়ে একটি মান নিয়ন্ত্রক পরীক্ষাগার নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে গাম্বিয়ার পুলিশ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি কোম্পানি পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে এই কফ সিরাপগুলো আমদানি করেছিল।
এতে আরও বলা হয়, যে ৫০ হাজার বোতল দূষিত সিরাপ গাম্বিয়ায় আমদানি করা হয়েছে, তার অধিকাংশই এখন জব্দ করা হয়েছে।