সব চেষ্টা ব্যর্থ এরপর ডা সাকলায়েন রাসেলের চমক
রোগীর সাথে ডা সাকলায়েন রাসেল।
নাকে রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসার জন্য শেষ অবধি গিয়েছেন থাইল্যান্ড পর্যন্ত। খালি হাতে ফিরলেন সেখান থেকেও। টিউমার থেকে অনবরত ঝড়ছে রক্ত । রক্ত বন্ধ করতে নাকের ভিতর গজ ঢুকিয়ে রাখা। গজ খুললেই আবার সেই রক্ত। এ যেন এক ভীবিষিকাময় জীবন।
এমনই একজন রোগীর অপারেশন করে তাঁকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সফল হয়েছেন ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও ভাস্কুলার সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা সাকলায়েন রাসেল।
আজ (১৮ সেপ্টেম্বর) নিজ ফেসবুক প্রোফাইলে সেই রোগীর সাথে নিজের ছবি দিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।
সেখানে তিনি বলেন, “নাকে রক্তনালির টিউমার, রক্ত পড়ে প্রতিমুহুর্তে...অনেক চেষ্টা করেও বন্ধ করা যায়নি...জীবন বাঁচাতে অবশেষে নাকের ভিতরে গজ ঢুকিয়ে বেঁচে থাকা...গজ খুললেই ব্লিডিং!
সব চেষ্টা ব্যর্থ....গেলেন থাইল্যান্ড ।সব দেখে তারাও না করে দিলেন।
এলেন আমার কাছে। নাক চান না; রক্তনালির টিউমার নিয়েও মাথা ব্যথা নেই। চাওয়া একটাই নাক দিয়ে রক্তপড়া বন্ধ হোক...গজমুক্ত একটা জীবন হোক।
সব বুঝিয়ে অপারেশন করলাম। সাথে সঙ্গী প্লাস্টিক সার্জন। ব্লিডিং বন্ধ করলাম; টিউমার সরালাম; নাকটাকে মোটামুটি ঠিক করার চেষ্টা করলাম।
রোগী বাড়ী গেলেন। এলেন অনেকদিন পর। মুখে মাস্ক নেই, ব্লিডিং নেই, বিভিৎস সেই রূপটাও নেই!
অনুমতি নিয়ে সেলফি তুললাম। প্রিয় রোগীর স্নিগ্ধ হাসিতে ঝলমল করে উঠল চেম্বারটা। কৃতজ্ঞতার মৌ মৌ গন্ধে প্লাবিত হল আমার সার্জন সত্ত্বা।
ব্যর্থতা আমাদেরও আছে। সেগুলো মন খারাপ করে দেয়। খুব বেশি মন খারাপ হলে এই সুখগুলো কাছে ডেকে আনি। জাবর কাটি। মন আনন্দে নেচে উঠে। জেগে উঠে কানটা। ভোরের আজান কানে আসে। অনেকগুলো হাত প্রার্থনার আঁচল পাতে। সেই আঁচলে নিজেকে দেখি।
চিকিৎসক পেশার এই সুন্দর রূপটা কেবল আমরাই দেখি । শত কষ্টের ভিড়ে, শত ব্যর্থতার ভিড়েও তাই ভালো থাকি।''
ইতোমধ্যে এই ফেসবুক পোস্টে অনেকেই তাঁকে সাধুবাদ জানিয়ে অভিব্যক্তি প্রকাশ করছেন। অনেকেই প্রশংসায় ভাসিয়েছেন এই চিকিৎসককে।