লিজ ট্রাসের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে এই কফে

অনলাইন ডেস্ক
2022-09-07 13:19:26
লিজ ট্রাসের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে এই কফে

স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন ট্রাসের ঘনিষ্ট বন্ধু থেরেসে কফে

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল এনেছেন লিজ ট্রাস। নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন ট্রাসঘনিষ্ঠ অনেকে। দেশটির প্রভাবশালী অনেক নেতাই আবার বাদ পড়েছেন।

বিবিসি বলছে, মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসেলে যুক্তরাজ্যের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করেন ট্রাস। এ সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ট্রাসকে নতুন সরকার গঠনের অনুমোদন দেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে রানীর ৭০ বছরের রাজত্বকালে ১৬তম প্রধানমন্ত্রী হন ট্রাস।

ট্রাসের নতুন মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কোয়াসি কোয়ার্টেংকে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন জেমস ক্লিভারলি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুয়েলা ব্রাভারম্যানকে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন মিশেল ডোনেলান।

যুক্তরাজ্যের নতুন উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন ট্রাসের ঘনিষ্ট বন্ধু থেরেসে কফে। তিনি ট্রাসের দীর্ঘদিনের মিত্র এবং রক্ষণশীল নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা কর্মসূচির কট্টর সমর্থক।

তবে অতীতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় কফের নিয়োগ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সাবেক কর্ম ও পেনশনমন্ত্রী কফেকে করোনা মহামারীর কারণে হাসপাতালগুলোর অপেক্ষমাণ রোগী কমানো এবং সামাজিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মেরামতে কঠিন পরিস্থিতির মখোমুখি হতে হবে।

তবে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট বলেছে, নতুন সরকারে কফে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। ট্রাসের ওপর তার সবচেয়ে বেশি প্রভাব রয়েছে। ফলে কফে সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

যদিও কফের অতীতের অবস্থান নিয়ে এরইমধ্যে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গর্ভপাতের অধিকার বিষয়ে কফের অবস্থানকে ‘গভীর উদ্বেগের’ আখ্যায়িত করেছে ব্রিটিশ প্রেগন্যান্সি সার্ভিস।

সাম্প্রতিক সময়ে কফে বাড়িতে পিলগ্রহণের মাধ্যমে গর্ভধারণ ঠেকানো এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে নারীদের গর্ভপাতের অধিকার বাড়ানোর বিরুদ্ধে ভোট দেন।

লিজ ট্রাসের সদ্যঘোষিত মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মন্ত্রিসভার অনেকে। তাদের একজন সাবেক বিচারবিষয়ক মন্ত্রী ডোমিনিক রাব। নতুন মন্ত্রীদের তালিকায় নেই সাবেক পরিবহনমন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিভ বার্কলে।

সাবেক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী পেনি মরডান্টকে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের নেতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন কেমি ব্যাডেনচ। কর্ম ও পেনশন বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন ক্লো স্মিথ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন কিট মাল্টহাউস।

ট্রাসকে দীর্ঘ সময় ধরে সমর্থন দিয়ে আসা জ্যাকব রিস-মগ ব্যবসা, জ্বালানি ও শিল্পকৌশল বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন। লেভেলিং আপ মন্ত্রণালয়ের হাল ধরছেন সিমন ক্লার্ক। আর অ্যানি-ম্যারি ট্রেভেলিয়ানকে পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, নতুন মন্ত্রিসভায় পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন রনিল জয়াবর্দেনা। ব্রান্ডন লুইসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। অর্থমন্ত্রীর পদ ছেড়ে আন্তঃসরকার সম্পর্ক ও সমতাবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন নাদিম জাহাবি। গতবারের মতোই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিজের দখলে রেখেছেন বেন ওয়ালেস।

মন্ত্রিসভার অন্যদের মধ্যে ক্রিস হিটন–হ্যারিস নর্দান আয়ারল্যান্ড–বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন। আলিস্টার জ্যাক ও রবার্ট বাকল্যান্ড যথাক্রমে স্কটল্যান্ড–বিষয়ক মন্ত্রী ও ওয়েলস–বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।

ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির (টরি) চেয়ারম্যান ও দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হয়েছেন জেক বেরি। অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লর্ড ট্রু। মন্ত্রিসভায় কপ–২৬–এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের পদ ধরে রেখেছেন অলোক শর্মা।

টরির নেতৃত্বের দৌড়ে গত সোমবার সাবেক অর্থমন্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাককে হারিয়ে দলের নেতা হন ট্রাস। ট্রাসের পক্ষে ৮১ হাজার ৩২৬ জন আর সুনাকের পক্ষে ৬০ হাজার ৩৯৯ টরি সদস্য ভোট দেন।


আরও দেখুন: