ব্রিটিশরা টাকা গুনছে আর আমরা লাশ

অনলাইন ডেস্ক
2022-09-04 14:17:15
ব্রিটিশরা টাকা গুনছে আর আমরা লাশ

গত মার্চে ইউক্রেনীয় একটি ছেলের কাঁদতে কাঁদতে পোল্যান্ড সীমান্ত পার হওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করেন ওলেনা

ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কি বলেছেন, ব্রিটিশরা যখন টাকা গুনছে, তখন ইউক্রেনীয়রা লাশ গুনছে। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি।

যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলোর ওপর কমবেশি পড়েছে স্বীকার করে ওলেনা জেলেনস্কি শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বলেন, ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জোরালো হলে সংকট দ্রুত শেষ হবে। চলমান যুদ্ধে মানুষের প্রাণহানির সংখ্যাটা গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরতে হবে।

রাজধানী কিয়েভে ধারন করা ওই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, স্বামী জেলেনস্কির সঙ্গে তার খুব কমই দেখা হয় আজকাল। তবে তারা প্রতিদিন কথা বলেন।

২০০৩ সালে ওলেনা ও ভলোদিমির জেলেনস্কি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ওলেনার কাছে বিবিসির সাংবাদিক লরা কুয়েন্সবার্গ জানতে চান, ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর বিশ্বব্যাপী তেল-গ্যাসের দামে সেই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে এবং ব্রিটিশ লোকজন এখন জ্বালানির বাড়তি মূল্য পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন- সেই জনসাধারণের উদ্দেশে তার কিছু বলার আছে কি না?

জবাবে ওলেনা জেলেনস্কি বলেন, আমি বুঝতে পারছি পরিস্থিতি অনেক কঠিন। তবে আমরা কভিড-১৯ মহামারীর সংকটময় দিনগুলোর কথা মনে করতে পারি, এখনো ওটা আমাদের সঙ্গে আছে। যখন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গিয়েছিল, ইউক্রেনেও তার প্রভাব পড়েছিল। ইউক্রেনেও সবকিছুর দাম বাড়ছে। পাশাপাশি আমাদের জনগণ নিহত হচ্ছে। তাই যখন আপনারা ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে কী পরিমাণ অর্থ আছে, সেটির হিসাব করেন, আমরাও এখানে সেটা করি। পাশাপাশি আমাদের হতাহতের সংখ্যাটাও গুনতে হয়।

গত মাসে কিয়েভ সফরে এসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ইউরোপে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে। তবে রাশিয়ার হামলা প্রতিহত করতে ইউক্রেনের সঙ্গে থাকতে হবে।

যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার এ বছর ৪২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। অর্থনীতি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সংকুচিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ পরিস্থিতির জন্য জ্বালানির অন্যতম সরবরাহকারী দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে ইউরোপের দেশগুলো। তাদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাশিয়া গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

ওলেনা জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের বাইরের লোকদের পক্ষে যুদ্ধের প্রভাব বোঝা কঠিন। তবে যুদ্ধের কারণে মানবিক সংকটের বিষয়টি বিশ্বের কাছে তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ।

ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি এ প্রসঙ্গে গত মার্চে ইউক্রেনীয় একটি ছেলের কাঁদতে কাঁদতে পোল্যান্ড সীমান্ত পার হওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি মনে করি, যে মা-বাবা এই ভিডিও দেখেছেন, তারা কেউ চোখের জল সামলাতে পারবেন না। আমি সব সময় নিজেকে ওই জায়গায় কল্পনা করি। আমি মনে করি, বিশ্বের সব মানুষেরই আমার মতো করে ভাবা উচিত।


আরও দেখুন: