মাঙ্কিপক্স নিয়ে জরুরি অবস্থা জারি ডব্লিউএইচওর

অনলাইন ডেস্ক
2022-07-24 13:27:59
মাঙ্কিপক্স নিয়ে জরুরি অবস্থা জারি ডব্লিউএইচওর

জরুরি অবস্থা ঘোষণার অর্থ এ রোগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের সরকারকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো

নতুন নতুন দেশে রোগী শনাক্তের খবরের মধ্যেই মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্বজুড়ে গণস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

শনিবার (২৩ জুলাই) সংস্থাটির মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গ্যাব্রিয়াসুস এ ঘোষণা দেন বলে খবর দিয়েছে রয়টার্স।

ডব্লিউএইচও’র জরুরি অবস্থা ঘোষণার অর্থ এ রোগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের সরকারকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো। কোনো রোগের বিরুদ্ধে ডব্লিউএইচওর এটাই সর্বোচ্চ সতর্কবার্তা।

২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ডব্লিউএইচও সাতবার বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সর্বশেষ ঘোষণা এসেছিল ২০২০ সালে করোনাভাইরাস নিয়ে।

২১ জুলাই ডব্লিউএইচও’র বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকের পর মাঙ্কিপক্স নিয়ে এ ঘোষণা এসেছে। সংস্থাটির বিশেষজ্ঞ দল আগেও এ বিষয়ে একবার বৈঠক করেছিল।

ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, বিশ্বের ৭৫টির বেশি দেশে প্রায় ১৬ হাজার মানুষ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। এবারের প্রাদুর্ভাবে এখন পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন। এবার রোগটি খুব দ্রুত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন পর্যন্ত যা অবস্থা তাতে এটি আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে বলা যায়।

নতুন কী এমন ঘটেছে যে এবারের প্রদুর্ভাবে ভাইরাসটি এত দ্রুত ছড়াচ্ছে— এ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত খুব সামান্যই বোঝা গেছে বলে জানান তিনি।

ডব্লিউএইচও’র মূল্যায়ন হলো, ইউরোপীয় অঞ্চল ছাড়া বাকি বিশ্বের জন্য মাঙ্কিপক্সের ঝুঁকি এখনো মাঝারি পর্যায়ের। কিন্তু ইউরোপীয় অঞ্চলের জন্য মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঝুঁকি উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তবে এ রোগের বিস্তার রোধে মানুষের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করার সময় এখনো আসেনি।

গ্যাব্রিয়াসুস বলেন, জরুরি অবস্থার ঘোষণা টিকা আবিষ্কারের কাজে গতি বাড়াতে এবং রোগের বিস্তার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের কাজে সহায়তা করবে। সঠিক দলে সঠিক কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে এই রোগের প্রদুর্ভাব আটকে দেওয়া সম্ভব।

মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সংক্রমিত রোগ। সাধারণত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে প্রাণীদের এ রোগ হতে দেখা যায়। প্রাণীদেহ থেকে এ রোগ মানবদেহে ছড়ায়।

কিন্তু এবার যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত কয়েক হাজার রোগী শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইসরায়েল, ব্রাজিল, মেক্সিকোসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে।

শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস এক দেহ থেকে আরেক দেহে ছড়ায়। এবারের প্রাদুর্ভাবে পুরুষরা বিশেষ করে সমকামী পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হয়েছেন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে।

মাঙ্কিপক্সের প্রাথমিক উপসর্গ হচ্ছে জ্বর, মাথাব্যথা, হাড়ের জোড়া ও মাংসপেশিতে ব্যথা এবং অবসাদ। জ্বর শুরু হওয়ার পর দেহে গুটি দেখা দেয়। এসব গুটি শুরুতে দেখা দেয় মুখে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে হাত-পায়ের পাতাসহ দেহের অন্যান্য জায়গায়। তবে ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।


আরও দেখুন: