জলবায়ু পরিবর্তনে চরম ঝুঁকিতে শিশুরা
এমনকি জলবায়ু সংকট কারও কারও ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যারও কারণ ঘটাচ্ছে
অ্যারন বার্নস্টাইন প্রায় ২৫ বছর আগে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন তার মনে হয়নি, জলবায়ু সংকট শিশুদের জন্য এমন গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে যাচ্ছে। খবর সিএনএন।
পেশা জীবনে সময় যত গড়াতে থাকল তিনি দেখতে লাগলেন, তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে প্রতি বছর আরও বেশি শিশু হাসপাতালে আসছে। এমনকি জলবায়ু সংকট কারও কারও ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যারও কারণ ঘটাচ্ছে।
হার্ভার্ডের বিশেষজ্ঞ বার্নস্টাইন বলেন, সে সময় প্রায় কেউই জলবায়ু পরিবর্তনকে স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে মনে করেনি। বিষয়টি আগে খেয়াল না করার জন্য নিজেকেই বোকা বোকা লাগে।
তার মতে, মানুষ এই সংকটের যে জায়গায় এখন দাঁড়িয়ে আছে, তার চেয়েও ভালো অবস্থায় থাকা সম্ভব ছিল সময়মতো বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হলে।
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন হালনাগাদ তথ্য নিয়ে একটি গবেষণার বিস্তৃত পর্যালোচনা প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর প্রভাব, বায়ুদূষণ ও মারাত্মক আবহাওয়ার মতো বিষয়গুলো, পানির নিম্নমান, চরম তাপ, শিশু স্বাস্থ্যের জন্য ব্যাপক ও ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি তৈরি করেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান লেখক কলাম্বিয়া সেন্টার ফর চিলড্রেনস এনভায়রনমেন্ট হেলথের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ফ্রেডেরিকা পেরেরা বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানিতে এই গ্রহের অত্যধিক নির্ভরতা ও শিশু স্বাস্থ্যের মধ্যে যোগসূত্র দেখানোই কেবল গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল না। বিশ্বের সবচেয়ে কমবয়সীদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপর্যয় থেকে সমাধানের উপায়গুলোও তুলে ধরাও এর লক্ষ্য ছিল।
তিনি বলেন, আমরা এই জলবায়ু প্রভাবের সম্পূর্ণ পরিসরটি দেখেছি, যা শিশুদের জরুরি বিভাগে পাঠাচ্ছে এবং সেই তালিকা বড় হচ্ছে। তাই আমি সবকিছু (পর্যালোচনায়) এক সঙ্গে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গবেষণা নিবন্ধে বন্যার পাশাপাশি বায়ুদূষণসহ বেশ কয়েকটি চরম জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঘটনার রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে সমস্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হলো উচ্চ তাপমাত্রা।
বিশেষজ্ঞরা বছরের পর বছর ধরে বলে আসছেন, শিশু এবং গর্ভবতী নারীরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর তালিকায় রয়েছে, যাদের হিট স্ট্রোকের মতো তাপজনিত সমস্যার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
বার্নস্টাইনের গবেষণায় বলা হয়, জলবায়ু সংকটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এখন জন্ম নেওয়া শিশুরা ৬০ বছর আগে জন্ম নেওয়া শিশুদের তুলনায় ৩৫ গুণ বেশি চরম তাপমাত্রা অনুভব করে।