করোনা মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে সাংহাই
হাসপাতালের পরিস্থিতি শোচনীয়। অনেক বয়স্ক মানুষ এখান থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মারা গেছেন
চীনের বড় শহর সাংহাইয়ে নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে প্রথমবার লকডাউন দিয়েও সংক্রমণের লাগাম টানতে পারছে না। প্রবীণদের জন্য শহরের একটি বড় হাসপাতাল করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউ মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে বলে খবর দিয়েছে বিবিসি।
নতুন ঢেউ শুরুর পর সাংহাইয়ে কারও মৃত্যুর কথা জানানো হয়নি। তবে শহরে পূর্বের পুদং এলাকার ডোংঘাই এলডারলি কেয়ার হাসপাতালের কর্মীরা বিবিসিকে বলেছেন, হাসপাতালের পরিস্থিতি শোচনীয়। অনেক বয়স্ক মানুষ এখান থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মারা গেছেন।
একজন নার্স বলেন, সাংহাইয়ের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের একটি তাদের হাসপাতাল। তিন সপ্তাহ আগে প্রথম সেখানে একজনের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। নগরের রোগনিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের একটি বিশেষজ্ঞ দল করোনা বিস্তার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
গত সপ্তাহে হাসপাতালে নিয়োগ পাওয়া একজন পরিচর্যাকর্মী বলেন, তিনি এক রোগীকে মারা যেতে দেখেছেন। এ ছাড়া এক সহকর্মীর কথাও শুনেছেন, যিনি অন্য এক রোগীর সঙ্গে ছিলেন, যিনি মারা গেছেন। তবে কর্মীরা বলেন, তারা করোনায় মারা গেছেন কি না, তা বলা কঠিন, কারণ, সেখানে অনেকে সংক্রমিত হয়েছেন।
ওই নার্স বলেন, হাসপাতালটি কোয়ারেন্টান কেন্দ্র হওয়ার আগে থেকেই তিনি সেখানে কাজ করতেন। রাতে ঘুমাতেনও সেখানেই। তিনি বলেন, এরপর তার এক সহকর্মী তাকে বলেন, পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে।
তার দাবি, হাসপাতালটিতে করোনার নতুন ঢেউ মোকাবেলায় সাংহাই সরকারের পাঠানো স্বাস্থ্যকর্মী এবং বিশেষজ্ঞরাও করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। হাসপাতালটিতে শত শত মানুষ করোনায় আক্রান্ত বলেও জানান তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে নানা অভিযোগ তুলে বলেন, ওই হাসপাতালে থাকা প্রিয়জনদের সাথে দেখা করতে পারছেন না তারা। এমন একজন বিবিসিকে বলেন, তার দাদি ওই হাসপাতালে ভর্তি। তবে তিনি কেমন আছেন বা তার শারীরিক অবস্থা কি, সেটা জানাও কঠিন হয়ে পড়েছে। গত লকডাউন শুরুর পর থেকে দাদির সাথে ফোনেও কথা বলতে পারছেন না তিনি। কর্মীরা ফোন ধরলেও তার দাদির পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত বলেননি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, পুদং নিউ ডিস্ট্রিক্ট হেলথ কমিশন এবং সাংহাই নগর কমিশনে বিবিসি যোগাযোগ করলেও তারা সাড়া দেননি।