ডায়াবেটিস চিকিৎসায় যুগান্তকারী আবিষ্কার কৃত্রিম প্যানক্রিয়াস
এ চিকিৎসা প্রযুক্তিতে মানুষের চামড়ার নিচে একটি সেন্সর বসানো হয়, যার সাথে যুক্ত থাকে মোবাইলের মতো ডিভাইস
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অন্তত ৯০০ জনের ওপর জীবন পরিবর্তনকারী কৃত্রিম প্যানক্রিয়াসের পরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, পরীক্ষাটির চূড়ান্ত সফলতা এলে সুচ দিয়ে আক্রান্তদের আঙুল থেকে রক্ত নিয়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষার প্রচলিত পদ্ধতির বিলোপ ঘটবে। একই সাথে জীবনের জন্য হুমকি হাইপোগ্লাইসেমিক সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। রক্তে সুগারের মাত্রা কমে গেলেই হাইপোগ্লাইসেমিক হয়ে থাকে।
বিবিসি বলছে, এ চিকিৎসা প্রযুক্তিতে মানুষের চামড়ার নিচে একটি সেন্সর বসানো হয়। যার সাথে মোবাইলের মতো ডিভাইস যুক্ত রেখে সার্বক্ষণিক দেহের সুগারের মাত্রা তদারকি করা সম্ভব হবে। মূলত একটি পাম্প সেন্সর থেকে তথ্য নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শরীরের ইনসুলিনের ভারসাম্য ঠিক রাখবে কৃত্রিম প্যানক্রিয়াস।
যুক্তরাজ্যে ৪ লাখের বেশি মানুষ টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্যানক্রিয়াস থেকে বের হওয়া হরমোন ইনসুলিনের অভাবে এটি হয়। আর টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে প্রচলিত চিকিৎসা হলো ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে ইনসুলিন প্রবেশ করানো। কিন্তু একবার ঠিকমতো ইনসুলিন দিতে না পারলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমে হাইপোগ্লাইসেমিক হয়ে মুহূর্তে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশলান হেলথ সার্ভিস (এনএইচসি) বলছে, বিশ্বে এই প্রথমবার প্যানক্রিয়াসের ওপর বড় ধরনের পরীক্ষা হয়েছে এবং তা ইনসুলিন আবিষ্কারেরও ১০০ বছর পর। কৃত্রিম প্যানক্রিয়াস প্রযুক্তি পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় নয়। কারণ খাবারের সময় কী পরিমাণ সুগার রোগী পাবেন, তা এতে ইনপুট দিতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা এ প্রযুক্তির অপার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন।
ওরমস্ক্রিক ডিস্ট্রিক্ট জেনারেল হাসপাতালের পেডিয়েট্রিক অ্যান্ডোক্রিনোলজিস্ট ডা. মে এনজি বলেছেন, ‘যন্ত্রটি খুবই চমৎকার। আমি ২৫ বছর শিশুদের ডায়াবেটিস অনুশীলন করছি এবং কৃত্রিম প্যানক্রিয়াস এতদিনে রোগটির চিকিৎসা পদ্ধতির মোড় ঘুরিয়ে দেবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জীবনমান উন্নত করা, শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণের ভারসাম্য স্ক্রিনে দেখতে পারা সত্যিই অভাবনীয়।’