বিশ্বে করোনায় মৃত্যু সরকারি হিসাবের ৩ গুণ

অনলাইন ডেস্ক
2022-03-11 15:54:22
বিশ্বে করোনায় মৃত্যু সরকারি হিসাবের ৩ গুণ

অথচ সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত ৫৯ লাখ মানুষের মৃত্যুর তথ্য নথিভুক্ত হয়েছে

করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত যত মৃত্যুর খবর সরকারের তরফে দেওয়া হয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা তার তিন গুণ বেশি। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ‘কভিড-১৯ একসেস মরটালিটি টিম’ ১৯১টি দেশ ও অঞ্চলের ওপর এক গবেষণায় এ তথ্য জানিয়েছে।

গবেষণা বলছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে মহামারী ঘোষণা করার পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত সরকারি হিসাবে ১ কোটি ৮০ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে। বিবিসি বলছে, এ সংখ্যার একটি অংশ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন; অন্যদের মৃত্যু হয়েছে সংক্রমণ পরবর্তী জটিলতায়।

গবেষকরা সরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ‘ওয়ার্ল্ড মরটালিটি ডেটাবেজ’, ‘হিউম্যান মরটালিটি ডেটাবেজ’ এবং ‘ইউরোপিয়ান স্ট্যাটিসটিসকস’ থেকে তথ্য নিয়েছেন।

দেশ ও অঞ্চলভেদে ‘অতিরিক্ত মৃত্যুর’ এ হারে পার্থক্য আছে। তবে এ গবেষণায় সামগ্রিকভাবে বিশ্বে গড় মৃত্যু হার দাঁড়িয়েছে প্রতি লাখে ১২০ জন। এর অর্থ হলো, ২০২০ সালের শুরু থেকে ২০২১ এর শেষ পর্যন্ত করোনা মহামারীতে প্রায় ১ কোটি ৮২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অথচ সরকারিভাবে ৫৯ লাখ মানুষের মৃত্যুর তথ্য নথিভুক্ত হয়েছে।

‘অতিরিক্ত মৃত্যু’র এ হিসাব গবেষকরা বের করেছেন গবেষণার পুরো দুই বছর সময়ের জন্য, সপ্তাহ বা মাস ধরে আলাদা কোনো হিসাব তারা করেননি।

ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, লাতিন আমেরিকা, ইউরোপ এবং সাব-সাহরান আফ্রিকার নিম্ন আয়ের দেশগুলোতেই এই ‘অতিরিক্ত মৃত্যু’ বেশি হয়েছে। তবে ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও কভিডে মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেশি।

বলিভিয়া, বুলগেরিয়া, নর্থ মেসিডেনিয়া, লেসোথো এবং ইসোয়াতিনি- এই পাঁচ দেশে ‘অতিরিক্ত মৃত্যুর’ হার সবচেয়ে বেশি। আর আইসল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড এবং তাইওয়ানে এ হার সবচেয়ে  কম।

গবেষণার বরাত দিয়ে বিবিসি লিখেছে, যুক্তরাজ্যে ২০২০ ও ২০২১ সালের মধ্যে ১ লাখ ৭৩ হাহার মানুষের মৃত্যুর যে তথ্য এসেছে, তা সরকারি হিসাবের কাছাকাছি। সেখানে অতিরিক্ত মৃত্যুর হার দেখানো হয়েছে প্রতি লাখে ১৩০ জন।

ইনস্টিটিউট অব হেলথ ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশনের প্রধান লেখক ডা. হাইডং ওয়াং বলেছেন, ‘জনস্বাস্থ্য সম্পর্তিক পরিকল্পনা সাজাতে মহামারীতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা জানাটা জরুরি। সুইডেন, নেদারল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, সেসব দেশে ‘অতিরিক্ত মৃত্যুর’ প্রধান কারণ কভিড। তবে বিশ্বের অনেক দেশের নির্ভরযোগ্য তথ্য আমাদের হাতে নেই।’ কভিডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মৃত্যুর সংখ্যা জানা সম্ভব হলে, তা পরে আরও গবেষণায় কাজে দেবে বলে মনে করেন তিনি।

মহামারী যে এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি এবং সামনের দিনগুলোয় ভাইরাসের নতুন কোনো বিপজ্জনক রূপ আবির্ভূত হতে পারে, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন গবেষকরা।


আরও দেখুন: