যত বেশি গাফিলতি, তত দীর্ঘায়িত হবে মহামারি: ডব্লিউএইচও
গাফিলতি করা হলে, মহামারি আরও দীর্ঘদিন ধরে চলবে।
বেশির ভাগ দেশ করোনা বিধিনিষেধ আরোপে কড়াকড়ি কমিয়ে দিয়েছে। ইউরোপের অনেক দেশ বিধিনিষেধ পুরোপুরি প্রত্যাহার করার পথে। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট কম প্রাণঘাতী হওয়ায় অর্থনীতির কথা ভেবে এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকারগুলো।
তবে এ বিষয়ে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তাদের বক্তব্য, বেশি তাড়াহুড়া করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। গাফিলতি করা হলে, মহামারি আরও দীর্ঘদিন ধরে চলবে।
ডব্লিউএইচও’র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাইক রায়ান বলেন, ‘আমরা এটা বুঝতে পারছি, সবাই চাইছে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে, সব কিছু খুলে দিতে। কিন্তু এই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ইচ্ছা মহামারিকে আরও দীর্ঘায়িত করে। এই বিষয়টা কিন্তু আমাদের ভাবা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে আমার ধারণা, রাজনৈতিক চাপ রয়েছে। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। আমি নিশ্চিত নই কী হবে। কিছু অনুমানও করছি না। বরং এভাবে সব বিধিনিষেধ লঘু করে দেওয়া নিয়ে কিছুটা উদ্বেগে রয়েছি।’
বিশেষজ্ঞদের সবারই আশঙ্কা, ফের কোনো নতুন ভ্যারিয়েন্ট যদি তৈরি হয়। গত বছর শেষের দিকে সাইপ্রাসের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছিলেন, সেখানে ডেল্টাক্রনের ২৫টি নমুনা পাওয়া গিয়েছে। শুক্রবার যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, সে দেশে ডেল্টাক্রন মিলেছে।
ডেল্টাক্রন ডেল্টা ও ওমিক্রনের মিশ্রণে হাইব্রিড ভ্যারিয়েন্ট। এটা কতটা ক্ষতিকর, তা অবশ্য জানানো হয়নি এখনো। ওমিক্রনের একটি সাব-ভেরিয়েন্ট বিএ.২ নিয়েও দুশ্চিন্তা রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।
ডব্লিউএইচও’র বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভন কেরকোভ বলেন, ‘বহু দেশকেই কিন্তু আগে আমরা দেখেছি, নিয়ম লঘু করার পরে ফের পুরনো নিয়মে ফিরতে হয়েছে। আবার কিছু দেশ ধাপে ধাপে কড়াকড়ি কমিয়েছে। এখন শুনছি, কিছু কিছু দেশ সব নিয়ম তুলে দিতে চাইছে।’
তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে কিছু দেশের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। তাদের হাতে প্রচুর পরিমাণ ভ্যাকসিন রয়েছে, জনসংখ্যার বড় অংশের ইমিউনিটি রয়েছে এবং পরিস্থিতি বিপজ্জনক হলে সামলানোর ব্যবস্থা আছে। কিন্তু তাদের দেখাদেখি অন্যরাও এ কাজ করলে বিপদ।’
মারিয়া বলেন, ‘কিছু দেশকে ভুল পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এসব করবেন না। কাউকে ধন্দে ফেলে দেবেন না। রাষ্ট্রনেতারা একটা বিষয় জেনে রাখুন, কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত এখনো।’
যুক্তরাজ্য ঘোষণা করেছে, চলতি মাসেই সব করোনা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে। এমনকি মাস্কও পরতে হবে না কাউকে। ইউরোপের একাধিক দেশ সেই পথে হাঁটার কথা ভাবছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশও করোনা বিধিনিষেধ তুলে দিতে চায়। বাংলাদেশেও দৃশ্যত কোনো ধরনের করোনা বিধিনিষেধ মানা হচ্ছে না।