করোনা বাড়িয়ে দিতে পারে মনোরোগের ঝুঁকি
করোনা আক্রান্ত হননি এমন ব্যক্তিদের তুলনায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রে বিষন্নতায় ভোগার ঝুঁকি ৩৯ শতাংশ
একাকীত্ব, অর্থনৈতিক চাপ, প্রিয়জনকে হারানোর বেদনাসহ করোনা মহামারীতে নানা কারণে মানুষের মধ্যে হাতাশা বা বিষন্নতার মতো মনরোগ দেখা দিতে পারে। করোনা আক্রান্ত হলে কী রোগীর মানসিক অসুস্থতায় ভোগার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে?
নতুন এক গবেষণা বলছে, হ্যাঁ পারে। ‘দ্য বিএমজে’ জার্নালে বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ পায় বলে জানায় দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।
গবেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভিতেরান্স হেল্থ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেমে’ থাকা দেড় লাখের বেশি করোনা রোগী এবং সুস্থ হওয়ার পর এক বছরের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন। একই বয়সের অন্যান্য মানুষ যারা করোনায় সংক্রমিত হননি তাদের অভিজ্ঞতা জেনে দুইয়ের মধ্যে তুলনা করেন।
এরপর গবেষকরা শুধু ওইসব রোগীদের বেছে নেন, যারা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আগের দুই বছরের মধ্যে কখনো মনরোগে আক্রান্ত হননি বা চিকিৎসা নেননি।
গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা আক্রান্ত হননি এমন ব্যক্তিদের তুলনায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রে বিষন্নতায় ভোগার ঝুঁকি ৩৯ শতাংশ এবং উদ্বিগ্নতায় ভোগার ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। মানসিক চাপ ও মানিয়ে নেওয়ার অসুবিধায় ভোগার ঝুঁকি ৩৮ শতাংশ বেশি। আর ঘুমের অসুবিধায় ভোগার ঝুঁকি ৪১ শতাংশ বেশি।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল হ্যারিসন বলেন, ‘এই গবেষণায় করোনা আক্রান্ত হওয়ার কয়েক মাস পরও বাড়তি মানসিক অসুস্থতায় ভোগার পরিষ্কার তথ্য মিলেছে।’
অধ্যাপক হ্যারিসন এ গবেষণা কাজে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। তবে ২০২১ সালে তিনি এ ধরনেরই একটি গবেষণা কার্যক্রম চালিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘করোনার সঙ্গে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি বেশ জোরাল বলে এখন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।’
গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র সাড়ে চার থেকে সাড়ে পাঁচ শতাংশের বেলায় করোনা-পরবর্তী বিষন্নতা, হতাশা, মানসিক চাপ বা মানিয়ে নেওয়ার সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে।
অধ্যাপক হ্যারিসন বলেন, ‘সৌভাগ্যক্রমে উদ্বেগ বা হতাশায় ভোগার মহামারী এটি নয়। তবে বিষয়টি একেবারে তুচ্ছও নয়।’