মডার্নার আদলে টিকা বানালো দক্ষিণ আফ্রিকা
চলতি বছরের মধ্যেই মানবদেহে এ টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা সম্ভব হতে পারে
মডার্নার এমআরএনএ করোনা টিকার উন্মুক্ত তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে এ প্রযুক্তির টিকা বানাতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকার কোম্পানি আফ্রিজেন বায়োলজিকস।
বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) আফ্রিজেনের কর্মকর্তাদের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি বছরের মধ্যেই মানবদেহে এ টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা সম্ভব হতে পারে।
অনুমোদন পেলে এটাই হবে প্রথম টিকা যেটি বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত আরেকটি টিকার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা এবং আগের টিকার উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠানের অনুমতি বা সহায়তা ছাড়াই তৈরি করা।
এছাড়া আফ্রিকা মহাদেশের প্রথম এমআরএনএ প্রযুক্তির টিকা হতে চলেছে এটি, যা পরীক্ষাগার পর্যায়ের নকশা, উন্নয়ন ও উৎপাদন সবই ওই মহাদেশে হয়েছে।
এর আগে এমআরএনএ করোনা টিকা তৈরি করা মডার্না এবং ফাইজার-বায়োএনটেক। তাদের প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের আহ্বান নাকচের পর গত বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর টিকার প্রাপ্তি সহজ করতে একটি পাইলট প্রকল্প নেয়। সেজন্য আফ্রিজেনসহ একটি জোট তৈরি করে।
ডব্লিউএইচও এবং জোটের অংশীদাররা আশা করছে, তাদের এই জোট ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর টিকা প্রাপ্তির বৈষম্য দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের কোম্পানিগুলোকেও প্রশিক্ষণ সহায়তা করতে রাজি হয়েছে আফ্রিজেন।
মডার্নার টিকা বেছে নেওয়ার কারণ হলো, তারা তাদের টিকার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি তথ্য-উপাত্ত উন্মুক্ত রয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানটি অঙ্গীকার করেছে, মহামারী চলার সময় তারা পেটেন্ট বা মেধাস্বত্ত্ব প্রয়োগের চেষ্টা থেকে বিরত থাকবে।
আফ্রিজেনের ঘোষণার পর তাৎক্ষণিকভাবে মডার্নার পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
আফ্রিজেনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পেট্রো টারব্ল্যানশে বলেন, ‘আমরা মডার্নার টিকা নকল করিনি। আমরা আমাদের নিজস্ব প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেছি, যেহেতু মডার্না আমাদের কোনো প্রযুক্তি দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মডার্নার সিকোয়েন্স ব্যবহার করে কাজটি শুরু করেছি। কারণ আমাদের দৃষ্টিতে এটিই ছিল সবচেয়ে ভালো সুযোগ। কিন্তু এটা মডার্নার টিকা নয়, এটা আফ্রিজেন এমআরএনএ হাবের টিকা।’
জোহানেসবার্গের ইউনিভার্সিটি অব দ্য উইটওয়াটারস্ট্যান্ডের সহায়তায় এ টিকা প্রস্তুত করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান টারব্ল্যানচে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ছয় মাসের মধ্যে আমাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অর্থাৎ মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে যেতে পারব। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এ বছরের নভেম্বর।’