করোনার ডেল্টা এবং সম্প্রতি আফ্রিকায় শনাক্ত নতুন ওমিক্রন ধরনে আক্রান্তদের উপসর্গ এক নয় বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার নারী চিকিৎসক অ্যাঞ্জেলিক কোয়েৎজি। ভারতের এনডিটিভিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

অ্যাঞ্জেলিকই প্রথম দেশটির সরকারি বিজ্ঞানীদের ওমিক্রন নিয়ে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলছেন, ওমিক্রনে আক্রান্তদের এখন পর্যন্ত ক্লান্তি ও শরীরে ব্যথার মতো মৃদু উপসর্গ দেখা গেছে। কিন্তু সর্দির কারণে নাক ঠেসে গেছে, এমন কথা কেউ বলেননি। এ ছাড়া ওমিক্রনে আক্রান্তদের শরীরে অতিরিক্ত তাপমাত্রার বিষয়টি লক্ষ করা যায়নি।

দক্ষিণ আফ্রিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অ্যাঞ্জেলিক কোয়েৎজি বলেন, ‘ওমিক্রন নিয়ে এত বেশি আতঙ্কিত হওয়া উচিত নয়। কেউ ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন সন্দেহ করলেও চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কেন না ঘরে বসে নিজে নিজে চিকিৎসা নিলেই এসব উপসর্গ থেকে সেরে ওঠা যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমি এটা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে চাই যে, করোনার নতুন ধরনের সংক্রমণক্ষমতা এর আগে শনাক্ত ডেল্টা ধরনের মতোই। সংক্রমণের ক্ষমতাকে আমরা বিতর্কিত করছি না। আমার জন্য এটা বলা কঠিন যে ওমিক্রন ডেল্টার চেয়েও ভয়াবহ। এই পর্যায়ে মনে হচ্ছে, এটা ডেল্টার মতোই সংক্রামক। বিজ্ঞানীরা হয়তো বলতে পারেন, এটা আরও বেশি সংক্রামক। কিন্তু প্রকৃত বিষয় হলো, এটা সংক্রামক এবং বেটা ধরনের চেয়ে বেশি।’

অ্যাঞ্জেলিক কোয়েৎজি বলেন, ‘ওমিক্রন ধরন টিকায় তৈরি প্রতিরোধব্যবস্থাকে ভেদ করতে পারে কি না, একবার করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা পুনরায় আক্রান্ত হবেন কি না এবং এই ধরনে আক্রান্তদের অবস্থা কতটা গুরুতর হতে পারে; আমরা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ওমিক্রন নিয়ে এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ওমিক্রন আক্রান্তদের কাউকে অক্সিজেন দেওয়ার বা আইসিইউতে নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু আক্রান্ত মানুষের মধ্যে কতজনকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে, এ বিষয়ে আমরা শিগগিরই একটা ধারণা পাব।’

অ্যাঞ্জেলিক কোয়েৎজি বলেন, ‘এটা আফ্রিকার কোনো রোগ নয়। বিশ্বজুড়ে ওমিক্রন শনাক্ত হচ্ছে। তাই সীমান্ত বন্ধের আগে আমাদের অপেক্ষা করা প্রয়োজন। ওমিক্রন ৩০ বছরের কম বয়সী তরুণদের মধ্যে বেশি শনাক্ত হচ্ছে। অবশ্য তারা গুরুতর অসুস্থ নন। তবে অবস্থা যেকোনো সময় বদলাতে পারে।’

দ্রুত সবাইকে টিকার আওতায় আনা এবং করোনার বৈশিষ্ট্যগুলো অনুসরণ করার ওপর জোর দেন অ্যাঞ্জেলিক কোয়েৎজি। তিনি বলেন, টিকা হয়তো এ ধরন থেকে সুরক্ষিত থাকার নিশ্চয়তা দেবে না, তারপরও টিকা নিতে হবে, মাস্ক পরতে হবে ও জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।