ডেল্টার চেয়েও করোনার অতিসংক্রামক ধরনের আশঙ্কা
ডেল্টার চেয়েও করোনার অতিসংক্রামক ধরনের আশঙ্কা
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভারতীয় ডেল্টা ধরনের চেয়েও নতুন অতিসংক্রামক ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সপ্তাহে একদল করোনা মহামারী বিশেষজ্ঞ (এপিডেমিওলজিস্ট) ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনার বিভিন্ন ধরনের গতি–প্রকৃতি বিশ্লেষণ ও এই বিষয়ে আলোচনা করেন।
বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির টিএইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের মহামারী বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম হানাগি বলেন, এটা অনেকটা আবহাওয়ার প্রতিবেদনের মতো। আমরা করোনার গামা, আলফা ধরনের সংক্রমণ দেখেছি। কিন্তু এখন শুধু করোনার ডেল্টা ধরন।
গত বছরের ডিসেম্বরে ভারতে প্রথম করোনার ডেল্টা ধরন শনাক্ত হয়। দ্রুত এই ধরনটি রূপ বদলাতে থাকে। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ভারতের সীমানার বাইরেও।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে এখন করোনার জিনবিন্যাসের ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ নমুনাই ডেল্টা ধরনের।
শুধু ডেল্টা নয়, করোনার এই ধরনটি রূপ বদলে আরও শক্তিশালী হয়েছে যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে ইতোমধ্যে শনাক্ত হয়েছে করোনার ডেল্টা প্লাস ধরন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেল্টার তুলনায় ডেল্টা প্লাস ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি সংক্রামক। তবে এগুলো নিয়ে এখনও যথেষ্ট তথ্য বিশেষজ্ঞদের কাছে নেই।
করোনার এসব নতুন ধরনকে ডেল্টা ধরনের ‘নাতি–পুতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন উইলিয়াম হানাগি।
করোনার আলফা ধরন যত দ্রুত রূপ বদলেছে, ডেল্টার রূপ বদলানোর গতি সেই তুলনায় বেশ ধীর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার টিকা দেওয়ার হার বাড়ছে। এটা একটা কারণ।
তবে ডেল্টার আরও শক্তিশালী ধরন এখনকার টিকার কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। যদিও এজন্য অনেক সময় লাগবে। তবে এসব বিশেষজ্ঞদের পূর্বানুমান মাত্র।
হঠাৎ করে ভাইরাসের নতুন একটি ধরন শনাক্ত হওয়া এবং সেটির অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতা অর্জন করা উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয়।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক রবি গুপ্তা বলেন, ভাইরাসের এমন ধরনকে ‘সুপারভেরিয়েন্ট’ বলা যায়।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা করোনার আরও একটি সুপার ধরন দেখতে পাবো। এখন প্রশ্ন হলো, সেটি কবে?’
রবি গুপ্তা বলেন, এখন করোনার প্রধানত দুটি রূপ (ডেল্টা ও ডেল্টা প্লাস) বেশি ভোগাচ্ছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে করোনার নতুন আরেকটি ধরন বিশ্ববাসীর সামনে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে। সংক্রমণের দিকে থেকে এটির ডেল্টাকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।