পোলিও কর্মী রেহমানির উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় বিল গেটস

অনলাইন ডেস্ক
2021-10-24 22:55:33
পোলিও কর্মী রেহমানির উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় বিল গেটস

২৪ অক্টোবর বিশ্ব পোলিও দিবস। আর এই দিনটিতে নিজের ফেসবুক পেজে রেহমানির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে পোস্ট দেন বিল গেটস।

পাকিস্তানের পোলিও টিকাদান কর্মী শুমাইলা রেহমানির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা ধনকুবের বিল গেটসের মুখে। তার আশা, রেহমানির হাত ধরেই বিশ্ব থেকে বিদায় নেবে পোলিও।

আজ ২৪ অক্টোবর বিশ্ব পোলিও দিবস। আর এই দিনটিতে নিজের ফেসবুক পেজে রেহমানির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে পোস্ট দেন বিল গেটস।

এ সংক্রান্ত তার শেয়ার করা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব পোলিওমুক্ত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে।

আর এই প্রচেষ্টার শুরুটা হয় ১৯৮৮ সালে। বর্তমানে বিশ্ব থেকে ৯৯ দশমিক ৯ ভাগ পোলিও বিদায় নিয়েছে।

এই প্রচেষ্টা শুরু না হলে এক কোটি ৯০ লাখ মানুষ পঙ্গু হতে পারতো যারা বর্তমানে চলাফেরা করছে। আর দেড় কোটি মানুষ মারা যেতে পারতো যারা বর্তমানে বেঁচে আছে।

এই কৃতিত্বের সিংহভাগেরই দাবিদার পোলিও কর্মীরা। গত ৩৩ বছর তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তিনশ’ কোটির বেশি শিশুকে পোলিও টিকাদান কর্মসূচির আওতায় এনেছে।

বিশ্বে বর্তমানে পাকিস্তান আর আফগানিস্তানেই পোলিওর প্রাদুর্ভাব রয়েছে। শুমাইলা রেহমানি পাকিস্তানের একজন পোলিও টিকাদান কর্মী।

রেহমানির কাজ নিজ সম্প্রদায়ের পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রত্যেক শিশুকে পোলিও টিকা দেওয়া। কাজটা যতটা সহজ মনে করা হচ্ছে, বাস্তবে তা অর্জন ঠিক ততটা সহজ নয়। প্রত্যেকটি শিশুর টিকা নিশ্চিতে প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, নিখুঁত পরিকল্পনা আর ধৈর্য।

টিকা নিয়ে প্রতিদিন সকালে রেহমানি পায়ে হেঁটে বের হতেন। যেসব বাড়িতে টিকা দিতে যেতেন, আগেই তার পরিকল্পনা গ্রহণ করতেন। এরপর বাসা-বাড়ির কড়া নেড়ে শিশুদের পোলিও টিকা খাইয়ে আসতেন তিনি।

অধিকাংশ পরিবারই তাদের সন্তানদের টিকা দিতে চাইতেন। তবে কিছু বাবা-মা আতঙ্ক এবং পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে তাদের শিশুদের টিকা দিতে অস্বীকার করতেন। তারপরও হাল ছাড়েননি রেহমানি।

এই টিকা কর্মী এসব বাবা-মায়েদের সঙ্গে কথা বলতেন। তাদের সব প্রশ্নের জবাব দিতেন। বলতেন, এই টিকা নিরাপদ ও কার্যকর। পরিবারগুলোকে টিকার গুরুত্ব বোঝাতে তিনি স্থানীয় এবং ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গেও কথা বলতেন।

সফলতা কিছুটা ধীরে এসেছে। চলতি বছরের শুরুতে রেহামানি জানান, আড়াইশ’র বেশি পরিবার তাদের সন্তানদের টিকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। তবে পরিবারগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করায় বর্তমানে টিকা না নেওয়া পরিবারের সংখ্যা চারটিতে নেমে এসেছে। তাদেরও টিকা নিতে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন রেহমানি।

রেহমানির মতো নিবেদিত প্রাণ স্বাস্থ্যকর্মী এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বের অবদানে পাকিস্তানে এ বছর মাত্র একজন পোলিও রোগী পাওয়া গেছে যা ২০২০ সালে ছিল ৮৪ জন।

আসছে নভেম্বরে দেশজুড়ে পোলিও টিকাদান কর্মসূচি চালানোর ঘোষণা দিয়েছে আফগানিস্তান। সকল শিশুকে টিকার আওতায় আনার এ ঘোষণা গত তিন বছরের মধ্যে প্রথম। পাকিস্তানও দেশ থেকে পোলিও নির্মূলের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। আশা করা যাচ্ছে, পোলিওমুক্ত দেশগুলোর কাতারে ওঠে আসবে তারা।

রেহমানির প্রশ্ন, ‘যদি অন্যান্য দেশ পারে তবে পাকিস্তানও কেন নয়?’


আরও দেখুন: