ভারতে ৪ কারণে আগস্টেই তৃতীয় ঢেউয়ের হানা
এটা দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো সেই তীব্রতা নিয়ে আসবে না
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত অবস্থা কিছুটা সামলে ওঠা ভারত এখন মহামারির তৃতীয় ঢেউয়ের সামনে। দেশটির ন্যাশনাল মেডিকেল রিসার্চের মহামারি ও সংক্রামক রোগ বিষয়ক প্রধান ডা. সমীরণ পাতিল এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে খবর দিয়েছে এনডিটিভি।
আগস্টের শেষ দিকেই সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন তিনি। তবে একই সাথে বলেছেন, তৃতীয় ঢেউ দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো তীব্র নাও হতে পারে।
গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাবের পর চলতি বছর দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। গত এপ্রিলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নজিরবিহীনভাবে বেড়ে যায়। হাসপাতালে ঠাঁই না পেয়ে অক্সিজেনের অভাবে অনেক রোগীর মৃত্যু ঘটে। এপ্রিলের শেষ থেকে মে মাসের শুরুতে ভারতে দিনে ৩-৪ লাখ করে রোগী শনাক্ত হচ্ছিল। সেই সঙ্গে দৈনিক মৃত্যুর হার বিশ্ববাসীকেও উদ্বিগ্ন করে তুলছিল।
মে মাসের মাঝামাঝি থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি দেখা দিয়েছে। দৈনিক শনাক্ত ধারাবাহিকভাবে কমে এখন ৩০-৪০ হাজারের মধ্যে রয়েছে। দৈনিক মৃত্যুও কমে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নাগাদ ভারতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৯ লাখ ৪৬ হাজার জন আর মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ১১ হাজার জন। বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় এবং মৃতের সংখ্যায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত।
ভারতে উদ্ভূত করোনার ডেল্টা ধরনেই দেশটির বিপর্যয়ের মুখে পড়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা; যে ধরনকে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ডা. সমীরণ এনডিটিভিকে বলেন, ‘আর এক মাস বাদে আগস্টের শেষ দিকেই সেই সময়টি আসতে পারে। তবে এর মানে এই নয় যে এটা দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো সেই তীব্রতা নিয়ে আসবে।’ চারটি কারণে তৃতীয় ঢেউ অবশ্যম্ভাবী বলে মনে করেন এ বিশেষজ্ঞ। প্রথমত, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়ে যাদের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল, রোগ প্রতিরোধে তার কার্যকারিতা ফুরিয়ে যাওয়া; দ্বিতীয়ত, অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিতে সক্ষম ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভব; তৃতীয়ত, অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিতে না পারলেও দ্রুত ছড়াতে সক্ষম ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভব; চতুর্থত, বিভিন্ন রাজ্যে সংক্রমণ প্রতিরোধের বিধিনিষেধ শিথিল।
ডেল্টার আরেকটি পরিবর্তিত রূপও ধরা পড়েছে ভারতে, যাকে ডেল্টা প্লাস বলা হচ্ছে। এটাই কি তৃতীয় ঢেউয়ের কারণ হবে- প্রশ্নে ডা. সমীরণ বলেন, ‘ডেল্টা ও ডেল্টা প্লাস, দুটোই এখন দেশজুড়ে সক্রিয়। তবে আমি আশা করি না যে ডেল্টার জন্য আগের মতো বড় বিপর্যয় দেখা দেবে।’