ভারতে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে জিকা ভাইরাস
জিকা সংক্রমণের কারণে কয়েক বছর আগে ব্রাজিলে কয়েক হাজার শিশু স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট মাথা নিয়ে জন্মায়
করোনায় বিপর্যস্ত ভারতে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণের তথ্য পাওয়া গেছে। এনডিটিভি বলছে, ভারতের কেরালা রাজ্যে ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণের মধ্যে এবার জিকা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস (Aedes aegypti) প্রজাতির মশার মাধ্যমে জিকা ভাইরাস ছড়ায়। কেরালার তিরুভ্যানাত্থাপুরামের ২৪ বছর বয়সী এক গর্ভবতীর রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে ভাইরাসটির সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই নারীর অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। তিনি গত ৭ জুন সন্তান প্রসব করেছেন। বর্তমানে তাকে রাজ্যের কেআইএমএস হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এরপর সন্দেহভাজন আরও ১৩ জিকা আক্রান্ত রোগীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পুনের জাতীয় ভাইরোলজি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
এডিস প্রজাতির মশা ছাড়াও জিকা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে সুস্থ মানুষের মধ্যে ছড়াতে পারে। জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হলে জ্বর, মাথাব্যথা, চোখ ওঠা, অস্থি-সংযোগে ব্যথা, ত্বকে র্যাশ ও অস্থিরতার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। অনেক সময় কোনো লক্ষণ নাও দেখা দিতে পারে।
জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ভয়াবহ কোনো সমস্যা হয় না। ৫-৭ দিনের মধ্যে এমনিতেই রোগ সেরে যায়। মৃত্যুর সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। গর্ভবতী নারীরা জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হলে গর্ভস্থ শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে মস্তিষ্কের পরিপূর্ণ বিকাশে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। যেটি মাইক্রোসেফালি (Microcephaly) নামে পরিচিত। জিকা সংক্রমণের কারণে কয়েক বছর আগে ব্রাজিলে কয়েক হাজার শিশু স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট মাথা নিয়ে জন্মায়।
১৯৪৭ সালে উগান্ডার জিকা বন থেকে এ ভাইরাসটির উৎপত্তি। জিকা ভাইরাস দমনের জন্য এখনো কোনো টিকা বা নির্দিষ্ট ওষুধ উদ্ভাবিত হয়নি। আক্রান্ত রোগীকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। প্রচুর পানীয় খাবার খাওয়া উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
তবে এ ভাইরাস থেকে প্রতিকারের উপায় হলো, মশা থেকে নিজেকে নিরাপদে রাখা। ঘরবাড়ি মশামুক্ত রাখা। ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার করা। মশার বিস্তার রোধ করা। মশানাশক ও মশারি ব্যবহার করা। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে নিরাপদে থাকা।