মুক্ত জীবনের পক্ষে জনসন, ভয়ে বিজ্ঞানীরা
একবার ভুল করা প্রধানমন্ত্রী আবারো ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন চলতি মাস থেকে করোনাভাইরাস মহামারীর সব বিধিনিষেধ তুলে দিয়ে মুক্ত জীবনে ফেরার যে আশা দেখিয়েছেন, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন তার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করা বিজ্ঞানীরা। খবর রয়টার্সের।
গত সোমবার আগামী ১৯ জুলাই থেকে ইংল্যান্ডে সব বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন জনসন। তবে বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী তার এই নতুন করোনা নীতিকে ‘বিপজ্জনক’ এবং ‘অকালে নেয়া সিদ্ধান্ত’ বলে বর্ণনা করছেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, বিশ্বে যুক্তরাজ্য টিকাকরণের সর্বোচ্চ হারের দেশগুলোর অন্যতম হলেও এখন সংক্রমণের নতুন ঢেউ শুরু হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার একটি গবেষণায় দেখা গেছে, জুনের শুরু থেকে এক মাসে ইংল্যান্ডে করোনা সংক্রমণ চারগুণ বেড়েছে। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের এ গবেষণায় বলা হয়, করোনার ডেল্টা ধরনের দ্রুত বিস্তারে নতুন সংক্রমণের যে ঢেউ শুরু হয়েছে, তাতে আনুমানিক হিসাবে প্রতি ছয় দিনে শনাক্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হবে।
ব্রিটেনে মুক্ত জীবনে ফেরার দিনটিকে বলা হচ্ছে ‘ফ্রিডম ডে’। দেশটির প্রায় ৮৬ শতাংশ মানুষ এক ডোজ টিকা পেয়েছেন এবং এরই মাঝে দুই তৃতীয়াংশ দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন।
ইম্পেরিয়াল কলেজের মহামারি বিশেষজ্ঞ অ্যান কোরি বলেন, ‘করোনাকে জীবনের অংশ হিসেবে মেনে নিয়ে বেঁচে থাকা আদৌ সম্ভব কিনা তা বলার সময় এখন আসেনি। বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত আরেকবার পেছালে ভালো হতো।’
শতাধিক বিজ্ঞানী স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রকাশনা ‘ল্যানসেট জার্নালে’ বরিস জনসনের বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার সিদ্ধান্তকে ‘অপরিপক্ক’ ও ‘বিপজ্জনক’ আখ্যা দিয়েছেন। করোনাকে জীবনের অংশ হিসেবে মানিয়ে নেয়াকে তারা ‘অনৈতিক’ এবং ‘অযৌক্তিক’ও বলেছেন।
তবে সরকার বলছে, এ সিদ্ধান্ত নিতে মহামারির প্রেক্ষাপট ছাড়াও অন্যান্য অনেক কিছু বিবেচনা করা হচ্ছে। নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেন, ‘দৈনিক সংক্রমণ ১ লাখে পৌঁছালেও স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি বিবেচনা করে সাধারণ জীবনে ফিরে যাওয়াটা এখন প্রয়োজন।’
প্রথমদিকে বিশ্বে করোনা ছড়াতে শুরু করার সময় অন্যান্য দেশের তুলনায় দেরি করে লকডাউন জারি করেছিলেন বরিস জনসন। ফলে দেশটিতে করোনা পরিস্থিতি ভয়ানক রূপ ধারণ করে। একবার ভুল করা প্রধানমন্ত্রী আবারো ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।