বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৪০ লাখ ছাড়াল
করোনায় ২০ লাখ মৃত্যু ছাড়াতে বছরের বেশি সময় লাগে। কিন্তু পরের ২০ লাখ মৃত্যু ঘটেছে মাত্র ১৬৬ দিনে
করোনাভাইরাসে মৃত্যু ৪০ লাখ ছাড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের টালিতে বেদনাদায়ক এ সংখ্যা স্পর্শের তথ্য দেওয়া হয়। অথচ দেশে দেশে করোনা সংক্রমণ থেকে জনগণকে রক্ষায় টিকার জন্য হাহাকার চলছে।
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোতে মৃত্যু কমেছে। তবে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট বা ডেল্টা ধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় বেশ কয়েকটি দেশের পরিস্থিতি নাজুক, যেখানে টিকারও সংকট চলছে।
রয়টার্স বলছে, করোনায় ২০ লাখ মৃত্যু ছাড়াতে বছরের বেশি সময় লাগে। কিন্তু পরের ২০ লাখ মৃত্যু ঘটেছে মাত্র ১৬৬ দিনে। সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে যে পাঁচটি দেশে (যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারত, রাশিয়া ও মেক্সিকো), তা বিশ্বে মোট মৃত্যুর অর্ধেক। জনসংখ্যার অনুপাতে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে পেরু, হাঙ্গেরি, বসনিয়া, চেক রিপাবলিক ও জিব্রালটারে।
চলতি বছরের মার্চ থেকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো মহামারির সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। বিশ্বের প্রতি ১০০ নতুন সংক্রমিতের ৪৩ জনই ছিল এ অঞ্চলের। গত সপ্তাহের হিসাবে মাথাপিছু মৃত্যুর হারেও বিশ্বের শীর্ষ নয়টি দেশই এ মহাদেশের।
বলিভিয়া, চিলি ও উরুগুয়ের হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের বেশিরভাগের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছর, যা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, তরুণ জনগোষ্ঠীও ব্যাপক হারে আক্রান্ত হচ্ছে। ব্রাজিলের সাও পাওলোতে হাসপাতালগুলোর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের ৮০ শতাংশই করোনা রোগী।
ভারত ও ব্রাজিল হচ্ছে এমন দুটি দেশ, যেখানে টানা সাত দিন ধরে দৈনিক সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। মৃতদেহের সৎকার ও সমাধির জন্য পর্যাপ্ত স্থানের অভাব দেখা দিয়েছে দুই দেশেই।
রয়টার্সের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিশ্বে প্রতিদিন করোনায় মৃত প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন ভারতে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করেন, বিশ্বে মৃত্যুর হিসাবে প্রকৃত সংখ্যা প্রতিফলিত হচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত মাসের একটি হিসাব থেকে জানিয়েছে, প্রাণহানির সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। সম্প্রতি বিশেষ মডেলিংয়ের মাধ্যমে ইকোনমিস্টের করা হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে মৃতের সংখ্যা আনুমানিক ১ কোটি ২০ লাখ।
দরিদ্র দেশগুলো টিকার ঘাটতির কারণে নিজেদের জনগোষ্ঠীকে টিকা দিতে পারছে না। তাই মহামারী নিয়ন্ত্রণে টিকা দান করার জন্য ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি ধনী সাত দেশের জোট জি-৭ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, দরিদ্র দেশগুলোর জনগণের জন্য তারা ১০০ কোটি ডোজ টিকা বিতরণ করবে।