ইউকে ধরনে মৃত্যুঝুঁকি ততটা নয়
ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যে পাওয়া অতি সংক্রমক করোনাভাইরাসের ধরনের কারণে গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টি হচ্ছে না বলে নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, করোনার অন্যান্য ধরনের তুলনায় এ ধরনে রোগীর খুব বেশি গুরুতর অবস্থা হচ্ছে না এবং মৃত্যুঝুঁকিও ততটা নয়।
সোমবার (১২ এপ্রিল) ‘দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজেস’ ও ‘দ্য ল্যানসেট পাবলিক হেলথ’ জার্নালে প্রকাশিত দুটি গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয় বলে খবর দিয়েছে এনবিসি।
গবেষণায় বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের করোনার ধরন দ্রুত ছড়াতে সক্ষম। এই বিশেষ ধরনটির নাম হলো বি১১৭। বর্তমানে করোনার এই ধরন ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এবং গত সপ্তাহ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকেও ভোগাচ্ছে এ ধরন।
তবে আগের গবেষণাগুলোয় বলা হয়েছিল, করোনাভাইরাসের অন্যান্য ধরনের তুলনায় যুক্তরাজ্যের ধরনে মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি। ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা বলেন, নতুন ধরন আগের ভাইরাসের চেয়ে ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক ছিল। কিন্তু এবারের দুটি গবেষণায় বলা হচ্ছে, বি১১৭-এর কারণে খারাপ উপসর্গ দেখা দিচ্ছে বা সংক্রমিত ব্যক্তির মধ্যে অন্যান্য ধরনের তুলনায় বেশি ঝুঁকি সৃষ্টি করছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
দুটি গবেষণাপত্রের একটিতে ৩৪১ জন করোনা রোগীকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। তাতে দেখা গেছে, তাদের ৫৮ শতাংশ বি১১৭-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর বাকি ৪২ শতাংশ রোগীর দেহে এই ধরন পাওয়া যায়নি। আবার যারা বি১১৭-এ আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ৩৬ শতাংশের প্রচণ্ড অসুস্থতা বা মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে যারা বি১১৭-এ আক্রান্ত ছিলেন না, তাদের ৩৮ শতাংশের এমন পরিস্থিতি হতে দেখা গেছে।
এসব উপাত্ত দিয়ে গবেষণায় বলা হয়েছে, শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হওয়া বা গুরুতর উপসর্গ দেখা দেওয়ার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের করোনার ধরনের সম্পর্ক নেই।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় গবেষণায় মোট ৩৬ হাজার ৯২০ জন ব্রিটিশ নাগরিকের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে তারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
ওই গবেষণায় দেখা গেছে, বি১১৭-এর পুনরুৎপাদনের হার করোনার অন্যান্য ধরনের তুলনায় ১ দশমিক ৩৫ গুণ বেশি। তবে একই সঙ্গে এ ধরনের ক্ষেত্রে রোগের গুরুতর অবস্থা সৃষ্টিরও কোনো প্রমাণ মেলেনি।
গবেষণার নেতৃত্বে থাকা ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের জৈববিজ্ঞানী ড্যান ফ্রাম্পটন বলেন, ‘আমরা সঠিক অর্থেই বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হয়েছি। এর কারণ এ সময়ে ইউকে ধরন বলা চলে ঝড় বইয়ে দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি বেশি সংক্রামক এই জন্য যে, রোগীরা আরও ভাইরাস তৈরি করছে।’