মার্কিন নির্বাচনে স্বাস্থ্যখাত নিয়ে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প-বাইডেন
জো বাইডেন এবং ডানে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রধান দুই প্রার্থী স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার মধ্যে মহামারী করোনাভাইরাসের সময় চলমান নির্বাচনে এই খাতকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা।
প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেন উভয়ে তাদের ইশতেহারে স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় কমানোর কথা বলছেন। তারা দুজনেই করোনাভাইরাসকে মোকাবেলা করার অঙ্গীকার দিয়েছেন। এছাড়া জনসাধারণের জন্য ওষুধের মূল্যে ছাড় এবং স্বাস্থ্যবিমাকারীদের সুরক্ষার আওতা নিয়েও নানা অঙ্গীকারের কথা বলেছেন তারা।
বারাক ওবামার করা সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যনীতি-আইন (এসিএ) বা 'ওবামা কেয়ার' বাতিল করতে মামলা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর জন্যে তিনি সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগও করেছেন যাতে এর বিরুদ্ধে রুল জারি হয়। কিন্তু ওবামা কেয়ারকে সব আমেরিকানদের কাছে প্রসারিত করতে ইতিমধ্যে বাইডেন একটি পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ইনস্যুরেন্স বজায় রাখার জন্যেও সেখানে সুযোগ রেখেছেন তিনি।
মেডিকেয়ার এবং মেডিকেড
মেডিকেয়ার এবং মেডিকেড হল মার্কিন ফেডারেল হেলথ প্রোগ্রাম যার আওতায় রয়েছেন ১১৫ মিলিয়ন জনগণ। যেখানে বাইডেন এই প্রোগ্রামকে সম্প্রসারণ করার কথা বলছেন ট্রাম্প সেখানে প্রাইভেট মার্কেটকে উন্নীত করে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে তার ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে।
মেডিকেয়ার প্রোগ্রামে কম বয়সীদের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে বাইডেন অঙ্গীকার করেছেন। এই সেবাটি ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য দেয়া হয়।
ওষুধের দাম একই মূল্যে রাখার জন্য ট্রাম্প অন্যান্য ধনী দেশের মতো সম্প্রতি একটি নির্বাহী আদেশ ইস্যু করেছেন। তিনি অবশ্য ঘোষণা করেছেন যে- ৩৩ মিলিয়ন মেডিকেয়ারের সুবিধাভোগী খুব শীঘ্রই মেইলে একটি কার্ড পাবেন। যেটি প্রেসক্রিপশন ওষুধের ক্ষেত্রে ২০০শ' ডলার পর্যন্ত খরচ করতে পারবে, যদিও এই পরিকল্পনা মাঝপথে রয়েছে।
তাছাড়া মেডিকেড হচ্ছে একটি রাষ্ট্রীয় চলমান প্রক্রিয়া যাতে স্বল্প আয়ের আমেরিকানরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
ওষুধের মূল্য
যখন অন্যান্য ইস্যুতে ট্রাম্প এবং বাইডেন ভিন্নমত পোষণ করছেন, তখন তারা দুজনেই প্রেসক্রিপশন ওষুধে কম খরচের বিষয়ে একমত এবং তারা অবৈধ মেডিকেল সেবাগ্রহণ এবং বিল প্রদানে ডাক্তার এবং হাসপাতাল সম্পর্কে বিস্ময়ই প্রকাশ করছেন।
২০১৬ সালে ট্রাম্প ক্যাম্পেইন করেছিল ওষুধের মূল্য কমাতে, নতুন উৎপন্ন ওষুধের দ্রুত অনুমোদন করতে এবং কম দামে ওষুধ আমদানি করতে।
বাইডেন নির্বাচনী প্রস্তাবনায় মেডিকেয়ারকে অনুমতি দেয়ার কথা উল্লেখ করে ওষুধ ক্রয়ে মূল্য ছাড়ে আলোচনা করার কথাও বলছেন। যদি কোন ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তাদের নির্দিষ্ট কোন ওষুধে মূল্য বৃদ্ধি করে সেক্ষেত্রে বাইডেন কর আরোপের কথা বলছেন।
স্বাস্থ্য সেবায় ব্যয়:
ট্রাম্প অবশ্য বৃহৎভাবে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় কমানোর বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছেন। তিনি হাসপাতালগুলো সেবাদানে যদি আচরণবিধি মেনে না চলে তার জন্য প্রতিদিন ৩০০ ডলার জরিমানার একটি রুলও ইস্যু করেছেন।
স্বাস্থ্যসেবার জন্য অর্থ নির্ধারণ নাটকীয়ভাবে নানা বিষয়ের ওপর নির্ভর করে- ইনস্যুরেন্স নেটওয়ার্কের কোন রোগীর এতে থাকা এবং বের হওয়া এবং হাসপাতালগুলো ইনস্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর সাথে মূল্য নিয়ে যে আলোচনা করে সেটিও নির্ভর করে।
এদিকে বাইডেন স্বাস্থ্যসেবা মার্কেটে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির কথা বলছেন, তিনি ওষুধ সরবরাহকারীদের সাথে অবিশ্বস্ত কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ কমানোর কথাও উল্লেখ করেছেন তার ইশতেহারে। তিনি অবশ্য স্বাস্থ্য সেবা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার কথা বলছেন।
করোনাভাইরাস ইস্যুতে যেসব প্রতিশ্রুতি
ট্রাম্প এবার নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে কোভিড-১৯ টিকা আবিষ্কার এবং এ রোগের চিকিৎসার উপায় খুঁজে বের করতে গবেষণা কাজের গতি আরও বাড়াবেন।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের করোনা নীতি সমালোচনা করে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী বাইডনে বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে 'ন্যাশনাল মাস্ক ম্যানডেট' অর্থাৎ দেশজুড়ে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করবেন। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে 'কন্টাক্ট-ট্রেসিং প্রোগ্রাম' চালু করবেন। এছাড়াও ফ্রি করোনা টেস্টের জন্য প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে অন্তত ১০টি নমুনা পরীক্ষা সেন্টার স্থাপন করবেন।