জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য
জানুয়ারি মাস জরায়ুমুখ ক্যান্সার সচেতনতা মাস (ইনসেটে ডা. মো. তৌছিফুর রহমান)
জরায়ু মুখ ক্যান্সারের নাম আমরা সবাই শুনেছি।
জানুয়ারি মাস জরায়ুমুখ ক্যান্সার সচেতনতা মাস। এ উপলক্ষে আমাদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার সচতনতার জন্য মাসব্যাপী ৩ পর্বের ধারাবাহিক আয়োজন থাকবে।
আজ প্রথম পর্ব শুরু হবে, ইনশাল্লাহ।
আজ আমরা জানবো
*সার্ভিক্স বা জরায়ুমুখ কি?
*বিশ্বব্যাপী এই ক্যান্সারে কত নারী আক্রান্ত হয়?
*আক্রান্ত হওয়ার কারণ কি?
*লক্ষনসমূহ কি কি?
জরায়ুর নিচের দিকে এক তৃতীয়াংশ জুড়ে সার্ভিক্স বা জরায়ুমুখ অবস্থিত। এটা দেখতে অনেকটা দুমুখ খোলা সরু নলের মতো।
জরায়ুমুখের ক্যান্সার দক্ষিনপূর্ব এশিয়া, বাংলাদেশসহ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বেশি। প্রতি বছর প্রায় ৬০8১২৭ জন জরায়ুমুখক্যান্সারে আক্রান্ত হন।
বাংলাদেশে ২০২০ সালের হিসাব মতে ৮২৬৮ (১২%) জন নারী এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন যা স্তন ক্যান্সারের পরেই সর্বোচ্চ। ৩০-৩৫ বছর ও ৫০-৫৫ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। সাধারণত সন্তান জন্মদানে সক্ষম নারীদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন ও মৃত্যুবরণ করেন। অথচ শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য এ ক্যান্সারে কোনো নারীরই মৃত্যু কাম্য নয়।
আসুন জেনে নেই এর কারণগুলো কি কি?
১। যৌনসঙ্গী পুরুষ যদি Human Papilloma Virus এবং অন্যান্য ভাইরাস শরীরে বহন করেন।
২। অল্প বয়সে সন্তান প্রসব।
৩। একাধিক যৌনসঙ্গী।
৪। অল্প বয়সে বিয়ে বা যৌন সম্পর্ক
৫। তাছাড়া অন্যান্য যৌনবাহিত রোগ শরীরে যদি থেকে থাকে।
লক্ষণ সমূহ কি কি ?
প্রাথমিক অবস্থায় কিছু ক্ষেত্রে লক্ষণ নাও থাকতে পারে।
প্রাথমিক অবস্থায়ঃ
* মাসিকের রাস্তা দিয়ে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ।
* সহবাসের পর ব্যথা অনুভূত হওয়া।
* সহবাসের পর রক্তক্ষরণ।
* মাসিকের রাস্তা দিয়ে দুর্গন্ধযুক্ত পানি বা পুজ বের হওয়া।
* জরায়ুমুখে প্রদাহ।
* ক্ষুধামন্দা, বমিভাব, ওজন কমে যাওয়া, গায়ে জ্বর থাকা।
অগ্রবর্তী অবস্থায়ঃ
* তল পেটে ব্যাথা।
* কোমরের পিছনে ব্যাথা যা পায়ের দিকে যেতে পারে।
* মাসিকের জ্বলাপোড়া, রক্তপড়া, পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত যাওয়া।
* মাসিকের রাস্তায় ফিস্টুলা, অর্থাৎ মাসিকের রাস্তায় প্রসাব বা মল আসা।
* কিডনী ফেইলিউর হয়ে যাওয়া।
* কুচকি ফুলে যাওয়া।
*পেটে ও বুকে পানি আসতে পারে।
পরবর্তী পর্বে আমরা জানবো জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে করনীয়।
জনসচেতনতায়ঃ
ডা. মো. তৌছিফুর রহমান
এমবিবিএস (শসোমেক), সি.সি.ডি (বারডেম), এম.ডি (অনকোলজি) বিএসএমএমইউ।
সহকারী অধ্যাপক (ক্যান্সার রোগ বিশেষজ্ঞ)
চেম্বার: ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক ও কনসাল্টেসন সেন্টার, বগুড়া।